চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মোট ৩ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে গ্রামীণফোন লিমিটেড, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কম। তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কোম্পানিটির মোট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪৬ লাখে। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৮ দশমিক ৩ শতাংশ, অর্থ্যাৎ ৪ কোটি ৯৩ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, ‘এই প্রান্তিক আমাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল, যখন বিশেষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের টিকে থাকার সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হয়েছে। কৌশলগত প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রেখে এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমরা আমাদের আর্থিক ও পরিচালনগত ধারা সুসংহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। এই সংকটকালে আমরা আমাদের গ্রাহকদের মোবাইল অ্যাকাউন্ট রিচার্জ, জরুরি ব্যালেন্স গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় সেবাসমূহ সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছি, যাতে তারা এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিগুলো মোকাবিলা করতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির টেকসই প্রকিউরমেন্ট কৌশল শুধু নিজস্ব কার্যক্রমে মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি আমাদের সাপ্লাই চেইনের অংশীদারদের পর্যন্ত বিস্তৃত, যারা সক্রিয়ভাবে টেকসই পদ্ধতির অনুশীলন করছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের সরবরাহকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত মোট ব্যয়ের ৭২ শতাংশ সেইসব কোম্পানিতে ব্যয় হয়েছে যারা কার্বন নিঃসরণ কমাতে সংকল্পবদ্ধ।’
গ্রামীণফোন লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) অটো রিসব্যাক বলেন, ‘এই প্রান্তিক আমাদের ব্যবসার স্থিতিশীলতা কেমন তা যাচাই করার সুযোগ করে দিয়েছে। তৃতীয় প্রান্তিকের শুরুটা হয়েছিল ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে। কিন্তু বেশ কিছুদিনের অস্থিতিশীলতা ও ইন্টারনেট শাটডাউন এবং বিভিন্ন অঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যার কারণে অর্থনীতি ও আমাদের ব্যবসায় বড় প্রভাব পড়েছে। এসব ঘটনা সত্ত্বেও আমাদের আয় শুধু ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৯৫০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ইবিআইটিডিএ ৮ দশমিক ৭ শতাংশ কমে হয়েছে ২ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। এটি উল্লেখযোগ্য যে, চ্যালেঞ্জিং পরিবেশের মধ্যেও আমরা ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ ইবিআইটিডিএ মার্জিন এবং প্রায় ৪৯ শতাংশ অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো মার্জিন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের শক্তিশালী ক্যাশ প্রবাহ ও ব্যালেন্স শিটের জন্য আমরা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনের সুযোগ পেয়েছি; পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য আকর্ষণীয় লভ্যাংশের নীতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের পরিকল্পিত বিনিয়োগ এবং বহুমুখী ব্যবসা ভবিষ্যতেও স্থিতিশীল ক্যাশ প্রবাহ নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’