৩৮ বছর বয়সে এখনও হকি খেলে যাচ্ছেন রাসেল মাহমুদ জিমি। তবে এবার এপ্রিলে এএইচএফ কাপ হকির জন্য বাংলাদেশের ৬২ জনের প্রাথমিক দলে জায়গা হয়নি দেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়ের। এনিয়ে হকি অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। বর্তমানে দলটির কোচ হয়েছেন আরেক সাবেক কৃতি খেলোয়াড় মামুনুর রশীদ। এনিয়ে নানান ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের কাছে।
বৃহস্পতিবার ৬২ জন খেলোয়াড় দিনব্যাপী কুপার টেস্টে অংশ নেবেন। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুশীলন ম্যাচ হবে। সেদিন বিকালে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ৪০ জন খেলোয়াড় নিয়ে হবে দীর্ঘমেয়াদে প্রস্তুতি। শুরুতে প্রাথমিক কোচ পদে অনেকেই থাকলেও মামুনুর রশীদই হবেন, তা অনেকের বিশ্বাস ছিল। আদতে তাই হয়েছে।
এনিয়ে মামুনুর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘লোকজন কেন এমন ধারণা করলো, আমি বুঝতে পারছি না। কে কোচ হবেন তা আমি আগে থেকে বুঝবো কী করে। ফেডারেশন যাকে ভালো মনে করেছে তাকেই চূড়ান্ত করেছে। আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। শুভ ও টিটুসহ কেউ কেউ তো সাক্ষাৎকারই দেয়নি। এখন কী বলবেন। আমার মনে হয় আগের পারফরম্যান্স দেখে ফেডারেশন কোচ নিয়োগ দিয়েছে।’
৬২ জনকে নিয়ে কুপার টেস্ট কেন? এখন তো ইয়ো ইয়ো কিংবা বিপ টেস্ট হয়। মামুনুর বলেছেন, ‘আসলে নানান কারণে কুপার টেস্ট হচ্ছে। সবাইকে নানানভাবে দেখার জন্য। প্রয়োজনে সামনের দিকে অন্য টেস্টও হবে।’
জিমির জায়গা না পাওয়া নিয়ে মামুনুরের ব্যাখ্যা, ‘জিমি কেন নেই তা আমি বলতে পারবো না। আমি কোচ হওয়ার আগেই তো প্রাথমিক দল চূড়ান্ত হয়েছে। এখানে আমার কী করার আছে। কাদের দলে ডাকা হচ্ছে তা আমি জানবো কী করে। আমার সঙ্গে তো কোনও আলোচনা তো করেনি। নির্বাচকরা যাদের যোগ্য মনে করেছে তাদের ডেকেছে।’
হকি অঙ্গনে কান পাতলে শোনা যায় জিমির সঙ্গে মামুনুরের পুরানো দ্বন্দের জের থেকে এমন পরিস্থিতি। যার কারণে দুজনের কেউ কারও সঙ্গে কথাও বলেন না। মামুনুর যদিও বলছেন, ‘আমার সঙ্গে জিমির কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কেন হবে বলেন তো। ওর সঙ্গে তো আমার কোনও লেনদেন বা অন্য কোনও সম্পর্ক নেই। ও বাংলাদেশের হকির অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিল। এছাড়া ও আমার ছাত্র ছিল। আমরা নৌবাহিনীতে একসঙ্গে কাজ করেছি। অনেকগুলো টুর্নামেন্ট জিতেছি। যারা এসব বলে তারা ঠিক করছে না। আমি কোচ হয়েছি নিজের যোগ্যতায়। কারও তদবীরে নয়। ২০১৫ সালের পর আবারও দায়িত্ব পেয়েছি। সুতরাং এখানে অন্য কিছু দেখার কিছু নেই। আমি আসলে এই বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি বিব্রত।’
তাহলে ৬২ জনের তালিকায় জিমিকে কি ডাকা যেতো না? অন্তত বয়স নয় ফিটনেস দেখে তার বর্তমান অবস্থান পরিষ্কার হতে পারতো। মামুনুর জবাবে বলেছেন, ‘জিমি তো ভালো খেলোয়াড় ছিল। তা নতুন করে বলার কিছু নেই। এখন হয়তো নির্বাচকরা ভবিষ্যৎ চিন্তা করছে। হয়তো সেই পজিশনে নতুন যারা আছে তারা ভালো করছে। সে কারণে হয়তো জিমি নাও থাকতে পারে। এছাড়া প্রিমিয়ার লিগ ও বিজয় দিবস এবং জাতীয় দলের কয়েক বছরের পারফরম্যান্সের শিট দেখেই নির্বাচকরা জিমিকে রাখার প্রয়োজনবোধ করেনি।’
জিমি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। যদি ৩৮ বছর বয়সে এসে তাকে বাদ পড়তে হয়। তাহলে তো তার আর লাল-সবুজ দলে খেলা হবে না? মামুনুর উত্তরে বলছিলেন, ‘এটা তো আমি বলতে পারবো না। আমি তো জানি কোনও এক টুর্নামেন্টে জিমির অবসর নেওয়ার কথা ছিল। পরে শুনেছি ও নেয়নি। যাই হোক এটা জিমি ও ফেডারেশনের বিষয়। আমাকে যা তালিকা দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাই।’