প্রথমার্ধের শেষ দিকে ১০ জন নিয়ে আবাহনী শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল, বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে ম্যাচ না হেরে যায়। তবে আদতে তা হয়নি। ফেডারেশন কাপের কোয়ালিফায়ারে পিছিয়ে থেকে দারুণভাবে ম্যাচে ফেরার পর ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ালে সেখানে আকাশি-নীল জার্সিধারীরা দারুণ ঝলক দেখায়। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে সমতায় থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধানে কোনও পরিবর্তন আসেনি। তবে ভাগ্য পরীক্ষায় আবাহনী ৪-২ গোলে কিংসকে হারিয়ে ফাইনালে নিশ্চিত করেছে।
অন্য ম্যাচে আগে গোল করেও জিততে পারেনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কামাল বাবুর রহমতগঞ্জ ২-১ গোলে গোপিবাগের দলকে হারিয়ে ফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে। দ্বিতীয় এলিমিনেটরে রহমতগঞ্জ মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা কিংসের। যে দল জিতবে তারা ট্রফির জন্য লড়বে আবাহনীর বিপক্ষে।
মঙ্গলবার ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারের জন্য মাঠে নামা আনিসুর রহমান জিকো শুরুতে ঝলক দেখান। আবাহনীর জাফর ইকবালের প্রথম শট আটকে দেন। এরপর যদিও রাফায়েল, সবুজ, এমেকা ও সবশেষ ইব্রাহিমের শট আর রুখতে পারেননি।
কিংসের ফের্নান্দেজ ও মোরসালিন গোল পেয়েছেন। তবে রাব্বি হোসেন রাহুলের শট আটকে দিয়ে মিতুল মারমা ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পান। প্রথমবার খেলা ব্রাজিলের ডিফেন্ডার ডেসিলের শট ওপর দিয়ে যায়। তাতেই দলের সর্বনাশ।
যদিও অতিরিক্ত সময়ে দুই দল সুযোগ পেয়ে গোল করতে পারেনি। মোরসালিন-হৃদয়রা পারেননি লক্ষ্যভেদ করতে।
নির্ধিারিত ৯০ মিনিটের ম্যাচে শুরু থেকে দুই দলই দুই বিদেশি নিয়ে মাঠে নামে।
প্রচণ্ড গরমেও দুই দলের স্বাভাবিক খেলা ছন্দে পড়ে টান। ১৬ মিনিটে ম্যাচের প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণের দেখা মেলে। সেটাও সেটপিস থেকে। জোনাথন ফের্নান্দেসের ফ্রি কিকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দেসিয়েল এলিস দস সান্তোসের হেড আটকে আবাহনীর ত্রাতা গোলকিপার মিতুল মারমা।
কুলিং ব্রেকের পর আক্রমণের ধার বাড়ায় কিংস, কিন্তু মিতুলের বিশ্বস্ত দেয়ালে চিড় ধরানোর জন্য তা ছিল না যথেষ্ট। ৩৭ মিনিটে রাকিব হোসেনের আড়াআড়ি ক্রস গোলমুখে পান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, কিন্তু মিতুল ঝাঁপিয়ে ফেরান। এরপর মজিবর রহমান জনির কোনাকুনি শট যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
৪২ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় আবাহনী। ফাহিমকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন আসাদুজ্জামান বাবলু। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় পানির গ্লাস মাটিতে ছুঁড়ে নিজের উপরই হতাশা ঝারতে দেখা যায় এই ডিফেন্ডারকে। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ায় রক্ষণের শক্তি বাড়াতে মিডফিল্ডার রবিউল হাসানকে তুলে ডিফেন্ডার শাকিল হোসেনকে নামান আবাহনী কোচ মারুফুল হক। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে দুরূহ কোণ থেকে জনির শট থাকেনি লক্ষ্যে।
বিরতির পর ১০ জনের আবাহনীর ওপর চেপে বসে কিংস। তবে যেভাবে গোলের আক্রমণ হওয়ার কথা তা হয়নি।
তাদের একমাত্র গোলটি এসেছে ৫৫ মিনিটে। গোলকিপার ও ডিফেন্ডারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে সহজেই গোল করে দলকে এগিয়ে নেন মজিবর রহমান জনি। ব্রাজিলিয়ান ফের্নান্দেজের ক্রসে জনি প্লেসিং করে জাল কাঁপান। এরপর ফাহিম-মোরসালিনরা সুযোগ পেয়েও ব্যবধান বাড়াতে পারেননি।
৮৪ মিনিটে আবাহনী সমতায় ফেরে। রাফায়েলের ফ্রি-কিক গোলফ্রেমে বাধা প্রাপ্ত হয়ে সামনের দিকে এসে পড়লে বদলি ফরোয়ার্ড আরমান ফয়সাল আকাশ প্লেসিং করতে ভুল করেননি।
অতিরিক্ত সময়ের পর টাইব্রেকারে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়েছে। মৌসুমে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার কিংসকে হারালো আবাহনী।