সোমবার শিলংয়ের ভিনান্তা হলের ব্যাংকুয়েট হলে সংবাদ সম্মেলনের আগে ভারতীয় সাংবাদিকরা বাংলাদেশ দল নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন। জামাল ভূঁইয়া আগে কলকাতায় মোহামেডানের হয়ে লিগ খেলেছেন। তারও আগে কলকাতাতেই বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে অধিনায়কত্ব করেছেন। লাল-সবুজ দলে এবার খেলছেন হামজা চৌধুরী। সব কিছু মিলে যেন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ অন্যরকম উত্তেজনায় গিয়ে ঠেকেছে। স্বাগতিক সাংবাদিকদের আগ্রহ দেখলেই তা পরিষ্কার। বাংলাদেশ কাপ্তানও তা আগে থেকে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। তাই তো সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রতিপক্ষ ভারতকে ‘বড় ভাই’ বলে সম্বোধনের পর জয়ের কথাটিও দৃঢ় কণ্ঠে শুনিয়েছেন।
জামাল ভূঁইয়া বাংলাদেশের হয়ে আগে তিনবার ভারতের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনবারের মধ্যে দুবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ড্র হয়েছে। একবার দুই গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে দুই দলের ম্যাচ মানে যে বাড়তি উত্তেজনা, সেটা টের পাওয়া গেছে এই সময়ে। সীমান্তপারের দু’দেশের ম্যাচটি দক্ষিণ এশিয়ার ডার্বি বললে ভুল হবে না। তা সবই বুঝতে পারছেন ৩৪ বছর বয়সী জামাল। সংবাদ সম্মেলনের এক ফাঁকে তার কাছে প্রশ্ন ছুড়ে দেন ঢাকা থেকে আসা এক সাংবাদিক- বাংলাদেশের সবাই জিততে চাইছে। এটা চাপ কিনা। বিষয়টা কীভাবে দেখছেন? জামাল তেজোদীপ্ত কণ্ঠে উত্তর দিলেন এভাবে, ‘আপনি যখন আপনার বড় ভাইয়ের বিপক্ষে খেলতে যান, তখন সবসময় জিততে চান। তাই নয়কি? আমরা কিন্তু তাই করতে চাই। ভারতের বিপক্ষে সবসময় চাপ থাকে। তবে এবার যেন অন্যরকম ম্যাচ হতে যাচ্ছে। একটু অন্যরকম। গত এক বছর কী হয়ে আসছে তা আপনারা দেখে আসছেন (সব কিছু মিলিয়ে)। আমরা চাপ অনুভব করছি। তবে আমরা ভালো অবস্থানে আছি।’
বাংলাদেশ দলের সবাই সেরাটা দিয়ে ম্যাচ জিততে চাইছে। দুই দলের মধ্যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে যতই পার্থক্য থাকুক না কেন, এর জন্য নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার অপেক্ষায় তারা। জামালের কথাতে তেমনই সুর, ‘র্যাঙ্কিংয়ের চিন্তা করি না। ফোকাস শুধু ম্যাচ জেতার দিকে। আমি বলবো এই স্কোয়াড শক্তিশালী। হামজা আসছে, যা আমাদের জন্য বড় উজ্জীবনী খবর। আমি চাই.. সবাই চাই- সেরাটা দিয়ে ম্যাচ জিততে।’
শিলংয়ে জহওরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে কাল মাঠ ভর্তি দর্শক থাকবে। স্বাভাবিকভাবে মাঠ স্বাগতিক দর্শকে থাকবে টইটম্বুর। জামাল এদিকে দৃষ্টি দিতে চাইছেন না। ম্যাচেই থাকতে চাইছেন, ‘প্রতিপক্ষ সবসময় শক্তিশালী। আমরা ম্যাচে দৃষ্টি রাখতে চাই, দর্শকদের দিকে নয়। এটা সব ম্যাচে হয়ে থাকে।’
ভারত ও বাংলাদেশের লিগের পার্থক্য কম নয়। দুই দেশের ফুটবল অবকাঠামোতে আছে বড় ব্যবধান। তবে জামাল মনে করছেন, যা আছে তা নিয়েই লড়াই করতে হবে, ‘ওদের আইএসএল আমাদের বিপিএলের চেয়ে ভালো। তবে আমি মনে করি না দু’দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে বড় পার্থক্য আছে। আমি মনে করি আমরা দল হয়ে খেলতে চাই, জিততে চাই। ড্র হলে ওকে। আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে বললে কিংবা জিজ্ঞেস করলে দেখবেন সবাই এক উত্তর দিবে... আমরা এখানে জিততে এসেছি।’
হামজা চৌধুরীর প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরে এসেছে সংবাদ সম্মেলনে। জামালও উত্তর দিলেন স্বাভাবিক ভঙ্গিতে, ‘হামজার খেলাটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক। এছাড়া অন্য যারা আছে তাদের মানসিকতা পরিবর্তন হয়েছে। খেলোয়াড়রা এবার আরও বেশি করে তৈরি কিছু একটা করার জন্য। জয়টা তাদের জন্য বড় কিছু।’