প্রিমিয়ার লিগে ফর্টিসের বিপক্ষে গোল দিয়ে তপু বর্মণের অন্যরকম উদযাপন সবার বেশ চোখে পড়েছে। কিংস অ্যারেনাতে গোল করেই সবার আগে গ্যালারির দিকে ছুটে গিয়ে পুষ্পা টু দ্য রুল মুভির নায়ক আল্লু আর্জুনের মতো উদযাপন করেছেন। তবে বসুন্ধরা কিংস তপুর সেই গোলের ওপর ভর করে ম্যাচ জিততে পারেনি। ফর্টিস আব্দুল্লাহকে নামিয়ে তাদের জয় রুখে দিয়েছে। একদিকে তপুর গোল পাওয়ার ধারাবাহিকতার আনন্দ, বিপরীতে দলের একের পর এক পয়েন্ট হারানোর দুঃখ!
একজন ডিফেন্ডার হয়ে নিয়মিত গোল পাচ্ছেন তপু। তা বেশ আশা জাগানিয়া। তার ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ গোলপ্রাপ্তি। এর আগে মোহামেডান স্পোর্টিংয়ে খেলার সময় এক মৌসুমে তিন গোল এসেছিল। আর এবার তো প্রিমিয়ার লিগে প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার আগেই ৫ গোল!
নিজের ক্যারিয়ারে এমন প্রাপ্তিযোগ দেখে তপুর স্বাভাবিকভাবে খুশি লাগছে। সেটা বাংলা ট্রিবিউনকে বললেনও, ‘মোহামেডানের হয়ে মৌসুমে সর্বোচ্চ তিন গোল করেছিলাম। সেটা অনেক আগের কথা। এবার কিংসের হয়ে ৫ গোল হয়ে গেলো। বলতে পারেন আমার কঠোর পরিশ্রম আর মনোযোগের কারণে সাফল্য আসছে। সামনে অনেক ম্যাচ রয়েছে। আশা করছি আরও গোল পাবো। এছাড়া সামনে এশিয়ান কাপের বাছাই আছে। চেষ্টা করবো জাতীয় দলের হয়ে এই পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে। ছাপ রাখতে চাই।’
তপুর ভালোলাগার পাশাপাশি খারাপ লাগার বড় কারণ কিংস এবার কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাচ্ছে না। লিগে ৮ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে দল। শিরোপা জিততে পারবে কিনা ঘোরতর সংশয় আছে।
তপু তাই বিষন্ন কণ্ঠে বললেন, ‘একজন ডিফেন্ডার হয়ে পাঁচ গোল করে ফেলেছি। আর খারাপ লাগার দিক হলো দল ভালো করতে পারছে না। কিছুটা খাবি খাচ্ছে। তবে ইউরোপে কিন্তু বায়ার্ন, ম্যানসিটিরও খারাপ সময় যাচ্ছে। আমার মনে হয় আমাদেরও সেরকম অবস্থা হয়েছে। তবে আশা করছি এমন খারাপ অবস্থা একসময় কেটে যাবে। দল আবারও ঘুরে দাঁড়াবে।’
লিগের প্রথম পর্ব শেষ দিকে। শীর্ষে থাকা মোহামেডানের সঙ্গে কিংসের ১০ পয়েন্ট পার্থক্য। তাই টানা ষষ্ঠ শিরোপা জেতা বেশ কঠিন তা মানছেন তপু, ‘মোহামেডানের সঙ্গে ১০ পয়েন্টের ব্যবধান কমানো কঠিন। তবে আমরা যদি সব ম্যাচ জিতি এবং মোহামেডান যদি পয়েন্ট হারায় তবে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে।’
এরপরই নিজেদের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তপু বলেছেন, ‘বিষয়টা কঠিন হয়ে গেছে। তারপরও আমাদের আশা ছেড়ে দিলে চলবে না। প্রথম পর্ব এখনও শেষ হয়নি। বিশ্বনাথ ও তারিক কাজীর অনুপস্থিতিটা আমাদের ভোগাচ্ছে। বিশেষ করে বিশ্বনাথ না থাকায় রাইটব্যাকে সমস্যা হয়েছে। তবে তারিক কাজী চলে আসলে আশা করছি, আমরা ঘুরে দাঁড়াবো। এছাড়া কিছুটা তারুণ্য নির্ভর দল হয়েছে। বিদেশিও আগের মতো নেই। সামনে হয়তো সমস্যা থাকবে না।’
অভিষেকের পর থেকে কিংস টানা ৫টি ট্রফি জিতেছে। প্রতিপক্ষকে তেমন সুযোগ দেয়নি। এবার এমন হবে তা ঘুণাক্ষরে ভাবতে পারেননি অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার, ‘কিংসের মতো একটা দল এরকম দুঃসময়ের মধ্যে পড়বে সেটা কখনোই কল্পনা করিনি। এমন একটা দল যাদের সব কিছুই উঁচু মানের, তাদের এমন হবে চিন্তা করা কঠিন। তবে আমি মনে করি সামনে আমাদের ভালো সময় আসবে। সেই অপেক্ষায় আছি আমরা।’
জাতীয় দলের হয়ে ৬ গোল করে তপু এখনও শীর্ষে। এছাড়া ঘরোয়া ফুটবলে এর আগে প্রতি মৌসুমে গোল আছে তার। তাই এবার নিয়মিত গোল পেলেও আক্ষেপটা যেন একটু বেশি।