পর্তুগালকে হারিয়ে চমক দেখানো জর্জিয়া কোনও মেজর টুর্নামেন্টে অভিষেকেই শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলে। নকআউটে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল স্পেন, যাদের কাছে গত বছর ইউরো বাছাইয়ের দুই ম্যাচ মিলে ১০ গোল হজম করেছিল। মূল পর্বে তারা এগিয়ে গেলেও সুবিধা করতে পারেনি। রবিবার কোলোনে স্টেডিয়ামে আত্মঘাতী গোল করে জর্জিয়ানদের এগিয়ে দিয়েছিল স্পেন, তারপরও শেষ হাসি হেসেছে তিনবারের সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ৪-১ গোলে জর্জিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ দল হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেন।
৫ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেছিল স্পেন। লামিনে ইয়ামালের ড্রাইভে দানি কারভাহাল বল পেয়ে ক্রস দেন বক্সের মাঝে। পেদ্রি সেখানে ছিলেন, পা সামনে বাড়িয়ে নেওয়া তার দুর্বল শট সহজে ঠেকান জর্জিয়া কিপার মামারদাশভিলি। ১০ মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের ক্রস থেকে দানি কারভাহালের হেড সেভ করে গোল হতে দেননি তিনি।
কিছুক্ষণ পর উল্টো গোল হজম করে চাপে পড়ে স্পেন। কাকাবাদজে ডান দিক থেকে গোলমুখের সামনে বাড়ান। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের চ্যালেঞ্জের মুখে লে নরমান্দের কোমরে লেগে জালে জড়ায় বল। আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় জর্জিয়া। তিন মিনিট পর ফ্যাবিয়ান রুইজের শট ঠেকিয়ে দেন মামারদাশভিলি।
অথচ মুহুর্মুহু আক্রমণ করেও গোল পাচ্ছিল না স্পেন। অবশেষে বিরতির আগে সমতা ফেরায় তারা। বক্সের বাইরে থেকে উইলিয়ামসকে বল দেন রদ্রি। ফিরতি পাস পেয়ে ছোট ডি বক্স থেকে জাল কাঁপান তিনি। ৩৯ মিনিটে সমতা ফেরায় স্পেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে লিড নেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছিল জর্জিয়া। পেদ্রি বলের দখল হারালে কারাস্তখেলিয়া বল পান। স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমনকে লাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসতে দেখে হাফ লাইন থেকে গোলপোস্টে বল মারেন। সিমন চোখের সামনে দিয়ে বল যেতে দেখেন। বাঁ পোস্টের বাইরে দিয়ে বল না গেলে দেখার মতো গোল হতো এটা।
৫১ মিনিটে ইয়ামালের নৈপুণ্যে স্পেন এগিয়ে যায়। তার ফ্রি কিক মামারদাশভিলি ফিরিয়ে দিলেও স্পেন বল ফিরে পায়। ডানদিকে ইয়ামাল বল পেয়ে ক্রস দেন বক্সের মধ্যে রুইজকে, যার শক্তিশালী হেডে স্প্যানিশরা ২-১ গোলে এগিয়ে যায়।
৭৫ মিনিটে রুইজের ভাসানো বল পেয়ে সহজেই জাল কাঁপান উইলিয়ামস। ৫২ মিনিটে পেদ্রির বদলি নামা দানি ওলমো দলের হয়ে চতুর্থ গোল করেন। ৮৩ মিনিটে জর্জিয়া বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে সুযোগ নেন তিনি এবং বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন। শেষ দিকে ইয়ামালের দারুণ কয়েকটি প্রচেষ্টা লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো। এর মধ্যে মামারদাশভিলি অবিশ্বাস্য সেভে তাকে হতাশ করেন।
পুরো ম্যাচে দাপট দেখিয়েছে স্পেন। ৩৫টি শট নিয়েছে তারা, যার মধ্যে ১৩টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে চারবার শট নেওয়া জর্জিয়া লক্ষ্যে রাখতে পারেনি একটিও। বল দখলেও আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে স্পেন। ৭৫ শতাংশ সময় বল তাদের পায়ে ছিল। তাই আরও বড় ব্যবধানে জিততে না পারার আক্ষেপ হয়তো থাকছে লা রোহাদের।
স্পেন শেষ আটে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক জার্মানির। আগামী ৫ জুলাই স্টুটগার্ট এরেনায় হবে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই। পরের দিন কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড।