বৈভব সূর্যবংশীর ব্যাটে আগুন জ্বললো। জয়পুরের পিচ থেকে তার ব্যাটিং তাণ্ডব দেখে পুরো গ্যালারি যেন তাজ্জব বনে গেলেন। ডাগআউট থেকে সতীর্থরা তো বটেই, মাঠের ভেতরে গুজরাট টাইটান্সের খেলোয়াড়রাও অবাক চোখে তাকিয়ে দেখেছেন তার চার-ছয়ের বৃষ্টি। গুজরাটের ২০৯ রান যেন ছেলেখেলা বানিয়ে ফেলেছিলেন বৈভব। সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড ভেঙে দলকে অনায়াসে জেতালেন ১৪ বছর বয়সী ওপেনার। ২৫ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে জিতেছে স্বাগতিক রাজস্থান রয়্যালস।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে গুজরাট ৪ উইকেটে ২০৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছিল। শুবমান গিল ও জস বাটলারের আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে একটু হলেও অস্বস্তিতে ছিল রাজস্থান। তবে তাদের দুজনকে একাই ছাপিয়ে গেলেন বৈভব। ১৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি এবং ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে আইপিএল ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচ রঙিন করেন। চলতি আইপিএলে এটি দ্রুততম ফিফটি এবং আইপিএল ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম শতক।
যশস্বী জয়সওয়ালের সঙ্গে ১৬৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে জয়ের ভিত গড়ে দেন বৈভব। গিলের বদলে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামা ইশান্ত শর্মার বলে চতুর্থ ওভারে ২৮ রান তোলেন দুজনে। তারপর দশম ওভারে এই জুটিকে এক ওভারে সর্বোচ্চ ৩০ রান দিয়েছেন করিম জানাত। পরের ওভারে রশিদ খানকে ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি করেন বৈভব। ১২তম ওভারে ভেঙে যায় এই জুটি। ৩৮ বলে ৭ চার ও ১১ ছয়ে ১০১ রান করেন বৈভব।
নিতিশ রানা ২ বলে ৪ রান করে ফিরে যান। জয়সওয়াল ও রিয়ান পরাগ বাকি পথ পার করেন। তাদের ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১৫.৫ ওভারে ২ উইকেটে ২১২ রান করে রাজস্থান।
৪০ বলে ৯ চার ও ২ ছয়ে ৭০ রানে অপরাজিত ছিলেন জয়সওয়াল। ১৫ বলে ৩২ রানে টিকে ছিলেন পরাগ। দুটি করে চার ও ছয় মারেন তিনি।
তার আগে গিল ও বাটলার ফিফটিতে গুজরাটকে ভালো অবস্থানে নেন। ৫০ বলে ৮৪ রান করেন গিল। ২৬ বলে ৫০ রানে অপরাজিত ছিলেন বাটলার। ওপেনার সাই সুদর্শন ৩০ বলে ৩৯ রান করে গুজরাটের দলীয় সংগ্রহে অবদান রাখেন।
আহমেদাবাদে আগের দেখায় ২১৭ রান করেছিল গুজরাট। ৫৮ রানে হেরেছিল রাজস্থান। এবারও দুইশর বেশি রান করে পার পেলো না সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচসেরা হয়েছেন বৈভব।
চলতি আইপিএলে পাঁচ ম্যাচ পর জিতলো রাজস্থান। ১০ ম্যাচে তৃতীয় জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে তারা। আর এই হারে গুজরাটের শীর্ষে ওঠার সুযোগ নষ্ট হলো। ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে তারা। এক ম্যাচ বেশি খেলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। ১২ পয়েন্টে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দ্বিতীয় স্থানে।