আবাহনী ও মোহামেডানের ম্যাচ মানেই উত্তেজনার পারদ আকাশচুম্বী। যদিও আগের মতো সেই উত্তেজনা আর নেই বললেই চলে। তবুও আবাহনী-মোহমেডান ম্যাচকে ঘিরে আলোচনা হয়। মঙ্গলবার ‘অলিখিত ফাইনালের’ আগে দুই দলের লড়াই নিয়ে যেমন আলোচনা হওয়ার কথা সেটা খুব একটা নেই। ম্যাচের আগের দিন আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল তাওহীদ হৃদয়কে কাল পাওয়া যাবে কিনা, সেটা! কেননা গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে নতুন করে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন অধিনায়ক। এই কারণে শিরোপা জয়ের হাতছানির ম্যাচে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আজ সোমবার ম্যাচের আগে এই ইস্যুতে বেশ উত্তাপ ছিল মিরপুরে। মোহামেডানকে বেশ সরব দেখা গেছে। যদিও শেষ পর্যন্ত শাস্তি প্রত্যাহার হচ্ছে না। হৃদয়কে ছাড়াই খেলতে হবে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ক্লাবকে।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সকাল নয়টায় শুরু হবে আবাহনী ও মোহামেডানের শিরোপার লড়াই। টানা দুই মৌসুমে ট্রফি জিতে হ্যাটট্রিক শিরোপার সামনে দাঁড়িয়ে আবাহনী। অন্যদিকে ২০০৯-১০ মৌসুমে সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল মোহামেডান। এরপর আর শিরোপা জেতা হয়নি দলটির। ২০১৩ সালের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিস্ট ‘এ’ স্বীকৃত পায়। তারপর আবাহনী পাঁচবার শিরোপা জিতলেও শিরোপাহীন মোহামেডান। তবে সব মিলিয়ে এই ক্লাবটি শিরোপা জিতেছে ২৩ বার। মঙ্গলবার শিরোপা জিততে পারলে সেটি হবে মোহামেডানের জন্য ইতিহাস। যদিও বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি মাঠে গড়ানো নিয়ে শঙ্কা আছে। ম্যাচটি না হলে কিংবা পরিত্যাক্ত হলে কপাল পুড়বে মোহামেডানের। কেননা প্রথম শিরোপা জিততে হলে তাদেরকে অবশ্যই ম্যাচ খেলে জিততে হবে। আবাহনী এক পয়েন্ট পেলেই চ্যাম্পিয়ন। কেননা ২৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আবাহনী। এদিকে মোহামেডানের পয়েন্ট ২৪। যার ফলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হলে হতাশ হতে হবে তাদেরকে।
ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে আবাহনীর কোচ হান্নান সরকার জানিয়েছেন শিরোপা উৎসব করতে মুখিয়ে তারা, ‘আমরা টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ থেকে যখন শুরু করেছিলাম ১৬টা ম্যাচ খেলবো, সেটা একটা প্ল্যানিং ছিল। শেষ ম্যাচ পর্যন্ত খেলতে হবে, সুপার লিগ কোয়ালিফাই করেছি। ম্যাচটা একটু আলাদা সিনারিও তৈরি হয়েছে- ফাইনাল। অবশ্যই তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিলাম, এখন সেই লক্ষ্যে শেষ ধাপে। খেলোয়াড়রাও উত্তেজিত কালকের দিনটা কখন আসবে, কখন খেলা শুরু হবে এবং দিন শেষ সাড়ে চারটা পাঁচটার দিকে কখন ট্রফিটা হাতে নেবে।’
মোহামেডানের পেসার ইবাদত হোসেনও জানালেন তাদের দল শিরোপা জিততে মুখিয়ে আছে, ‘দল অনুযায়ী আমরা ভালো খেলছি। আগামীকালকে (মঙ্গলবার) আমাদের ফাইনাল ম্যাচ। দোয়া করবেন আমাদের জন্য, আমরা যেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারি। মোহামেডান অনেক বছর ধরে ট্রফিটা জিততে পারেনি। আলহামদুলিল্লাহ এই বছর দলটা অনেক ভালো ছিল। যার কারণে শেষ পর্যন্ত আমরা ফাইনাল পর্যন্ত আসতে পেরেছি। দোয়া করবেন কালকে যেন আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারি।’
এমনিতেই দলের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ক্রিকেটারকে হারিয়েছে মোহামেডান। মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলছেন। এর বাইরে তামিম ইকবাল অসুস্থ, তাসকিন আহমেদ চিকিৎসা নিতে ইংল্যান্ড গেছেন। এরই মধ্যে দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হৃদয় নিষিদ্ধ হয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে অস্বস্তিতে পুরো দল। হৃদয়কে নিয়ে ইবাদত বলেছেন, ‘অবশ্যই মিডল অর্ডারে ও (হৃদয়) আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার। ওর থাকাটা খুব দরকার ছিল। যেহেতু নেই ওকে খুব মিস করবো।’
হৃদয়কে নিয়ে হান্নান বলেছেন, ‘হৃদয় বেসিক্যালি একজন অ্যাটাকিং প্লেয়ার। সে সবসময় জিততে চায়, চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। তার মানসিকতা অনেক আগে থেকেই আমি জানি, হৃদয়ের সঙ্গে খুবই ক্লোজ একটা অ্যাটাচমেন্ট আমার আছে। প্রথম যখন নিষেধাজ্ঞা হয়, তারপরও আমার তার সঙ্গে কথা হয়েছিল। পরের ঘটনা হলো, তখন আমি একটু আপসেট হয়েছি। আমরা অনেক সময় জানি যে প্লেয়াররা হিট অফ দ্য মোমেন্ট অনেক কিছু করে ফেলে। এটা হয়তো সে জানে সে করবে না, কিন্তু ওই মুহূর্তে ঘটে যায়।’