একটা সময় মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচ মানেই ছিল বাড়তি উন্মাদনা। সময়ের স্রোতে সেসব এখন সুদূর অতীত। ভক্তদের মধ্যে পুরনো সেই আগ্রহে ভাঁটা পড়লেও দুই দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে কিছুটা হলেও লড়াইয়ের আভাস থাকে। লম্ব সময় ধরে দুই দলের লড়াইয়ে জয়ী দলের নাম ছিল আবাহনী। তাদের আধিপত্যে এবার ইতি টেনে দিয়েছে মোহামেডান। ৯ বছর পর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে আবাহনীকে হারিয়েছে তারা। মাঝে একবার কুড়ি ওভারের প্রিমিয়ার লিগে জিতেছিল মোহামেডান।
শনিবার আগে ব্যাটিং করে মোহামেডান ২৬৪ রান সংগ্রহ করে। সহজ এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২২৫ রানে অলআউট হয় আবাহনী। তাতে ৩৯ রানের জয় পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহামেডান।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ভালো শুরুর পরও মোহামেডান দলীয় ইনিংসটাকে তিনশর কাছাকাছি নিতে পারেনি। আবাহনীকে ২৬৪ রানের লক্ষ্য দিতে পারে। মাঝারি মানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৩১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আবাহনী। সেই চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে ২৮ এবং মুমিনুলের সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর মাহফুজুর রহমান রাব্বি দ্রুত বিদায় নিলে মোসাদ্দেক হোসেন ও শান্ত মিলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন। তবে মোসাদ্দেকের (২৪) আউটের পর শান্তও (৮০) ফিরে গেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারায় আবাহনী। শেষ পর্যন্ত ৪৭.২ ওভারে ২২৫ রান তুলে অলআউট হয় তারা। শান্ত ১১৩ বলে ৭ চারে ৮০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। এর বাইরে মুমিনুল ২৫, মিঠুন ১৯ ও মৃত্যুঞ্জয় ২৪ রানের ইনিংস খেলেন।
২০১৬ সালে এই মাঠেই সর্বশেষ আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছিলো মোহামেডান। মোহামেডানের বোলারদের মধ্যে এবাদত হোসেন ৩৬ রানে নেন চারটি উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাইফ উদ্দিন নেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া মোহামেডান শুরুতেই রনি তালুকদারকে হারায়। দ্বিতীয় উইকেটে আনিসুল ইসলাম ইমন ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন মিলে ১২৩ রানের জুটি গড়েন। মাহিদুল ৫৫ বলে ৪৮ রান করে আউট হলে ভাঙে জুটি। এই জুটির পর মোহামেডানের আর কেউই দাঁড়াতে পারেনি। মাহমুদউল্লাহ (১৭), মুশফিকুর রহিম (২০) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (১৮) ভালো শুরুর পরও ইনিংসটাকে বড় করতে পারেনি। যা করেছেন আনিসুল একাই। চলতি লিগে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১১৮ বলে ১৮ চার ও ২ ছক্কায় ১১৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হন ২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটার। এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আনিসুলের দারুণ সেঞ্চুরিতে মোহামেডান ৪৮.২ ওভারে ২৬৪ রানে থামে।
আবাহনীর বোলারদের মধ্যে নাহিদ রানা ৪৯ রানে নেন তিনটি উইকেট। এছাড়া মৃত্যুঞ্জয় চেীধুরী, রাকিবুল হাসান ও মাহফিজুর রহমান রাব্বি নেন দুটি করে উইকেট। একটি উইকেট নেন মোসাদ্দেক হোসেন।