ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের দুই ব্যাটারের অদ্ভুত আউট নিয়ে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। দুই ব্যাটার রাহিম আহমেদ ও মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির প্রশ্নবিদ্ধ আউটের পর তদন্তে নামছে বিসিবির অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট (এসিইউ)। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ও গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারের রিপোর্টের ভিত্তিতেই তদন্তের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বিসিবির দুই ক্রিকেটারের আপ্রোচ ও আউটের ধরন নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় এসিইউ নিজেরাই তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে। বিসিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে, 'বিসিবি তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করতে চায় যে, তারা ক্রিকেটের অখণ্ডতা এবং সর্বোচ্চ নৈতিক মান বজায় রাখবে। বোর্ডের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসারে, খেলার চেতনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন কোনও দুর্নীতি বা অসদাচরণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিট এবং তদন্ত শুরু করেছে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বোর্ড তার আওতাধীন সকল ক্রিকেট কর্মকাণ্ডে ন্যায্যতা এবং শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার শাইনপুকুর ও গুলশান ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচে। প্রথমে রাহিম আহমেদের আউট বিস্মিত করেছে। ৩৬তম ওভারে নিহাদ উজ জামানের বল ক্রিজ ছেড়ে অনেকটা বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করেন শাইনপুকুরের ব্যাটার। বল অনেক বাইরে থাকলেও তিনি বলের কাছেও যাওয়ার চেষ্টা করেননি। বলের নাগাল না পেয়েও ডিফেন্সের ভঙ্গি করেন তিনি। ক্রিজে ফেরার কোন তাড়না তার মধ্যে দেখা যায়নি।
পরের আউটটি ছিল আরও দৃষ্টিকটূ। শরিফুল ইসলামের (২২*) দারুণ ইনিংসের ওপর ভর করে জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল শাইনপুকুর। নাঈম ইসলাম স্টাম্পের বাইরে বোলিং করার চেষ্টা করেন। তার প্রথম বলটি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে বলের কাছে যাওয়া বা শট খেলার কোনও চেষ্টাই করেননি মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির। না খেলেই ক্রিজের বাইরে গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে বল ছেড়ে দেন। তখন বল চলে যায় গুলশানের উইকেটকিপার আলিফ হাসান ইমনের গ্লাভসে। প্রথম দফায় স্টাম্পিং করতে পারেননি ইমন। তখনও ক্রিজে ঢোকার অনেক সময় ছিল সাব্বিরের সামনে। কিন্তু কোনও চেষ্টাই দেখা যায়নি তার তরফ থেকে। সবকিছু কাছে থেকে দেখলেও ক্রিজের একটু বাইরে ব্যাট রাখেন তিনি। পরে দ্বিতীয় দফায় তাকে স্টাম্পিং করেন আলিফ। ৫ রানের জয় পায় গুলশান।
ম্যাচে শাইনপুকুর শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করে ১৭৮ রানে গুলশানকে গুটিয়ে দিয়েছিল। তবে রান তাড়ায় তারা শুরুতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে। পরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিলেও শেষ পর্যন্ত হেরে যায় শাইনপুকুর। হারলেও সন্দেহজনক আউট দিয়ে প্রশ্ন রেখে গেছেন তাদের ক্রিকেটাররা। গুলশান এই জয়ের মাধ্যমে সুপার লিগ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে। অন্যদিকে, শাইনপুকুর রেলিগেশন লিগে চলে গেছে।