২০২২ সালের পর আর জাতীয় দলে খেলা হয়নি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করতে পারছিলেন না তিনি। এই কারণেই নির্বাচকদের নজর থেকে হারিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে এবারের প্রিমিয়ার লিগে অধিনায়ক হিসেবে তো বটেই, একজন অলরাউন্ডার হিসেবে দলে ভীষণ প্রভাব ফেলছেন তিনি। মোসাদ্দেকের নেতৃত্বে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী শিরোপার দৌঁড়ে সবার উপরে। টানা দুই ম্যাচ দলকে জিতিয়ে হয়েছেন ম্যাচ সেরা। আগের ম্যাচে শাইনপুকুরকে ৮৮ রানে অলআউট করায় সবচেয়ে বড় অবদান মোসাদ্দেকের।
বুধবার শক্তিশালী প্রাইম ব্যাংককে ১৩৩ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি ১০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। সেখানে বড় অবদান মোসাদ্দেকের, ব্যাট হাতে ৩৭ রানের পর বল হাতে তিন উইকেট নিয়ে প্রাইম ব্যাংককে হারানোর মূল নায়ক তিনিই। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে হাফ সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত ও পারভেজ হোসেন ইমন পার্শ্বনায়ক হয়ে উঠেছেন।
বিকেএসপিতে টস জিতে শান্ত ও পারভেজের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রান সংগ্রহ করে আবাহনী। কঠিন লক্ষ্যে খেলতে নেমে মোসাদ্দেক ও রাকিবুল হাসানের ঘূর্ণিজাদুতে ৩২ ওভারে ১৫৭ রানে অলআউট হয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। দলটির ওপেনার নাঈম শেখ ও মিডল অর্ডার ব্যাটার শামীম হোসেন ছাড়া আর কেউই বড় সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারেনি। নাঈম ৭৪ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। অন্যদিকে শামীম খেলেন ২৬ বলে ৪০ রানের ক্যামিও ইনিংস। এর বাইরে দুজন কেবল দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পেরেছেন। তারা হচ্ছেন ইরফান শুক্কুর (১৫) ও হাসান মাহমুদ (১৩)।
আবাহনীর বোলারদের মধ্যে মোসাদ্দেক তিনটি উইকেট নিয়েছেন। দুটি উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল। নাহিদ রানা, শেখ মেহরাব হোসেন, জিসান আলম ও মাহফুজুর রহমান নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে জিসান আলমকে (১৩) হারালেও পারভেজ ও শান্ত মিলে ১৩৭ রানের জুটি গড়েন। ১৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে আগের ম্যাচে রেকর্ড গড়া পারভেজ আউট হলে জুটি ভাঙে। ৭১ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় তিনি ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন। সঙ্গীকে হারিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে শান্তও বিদায় নেন। ৭০ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৮ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরতে হয় বাংলাদেশের অধিনায়ককে। এই দুইজনের বিদায়ের পর মোসাদ্দেকের ৪২ বলে ৩৭, রিপন মন্ডলের ৯ বলে ১৭ রানের ওপর দাঁড়িয়ে আবাহনী ২৯০ রানের ইনিংস দাঁড় করায়।
প্রাইম ব্যাংকের হয়ে পেসার হাসান মাহমুদ নেন সর্বোচ্চ চারটি উইকেট। এর বাইরে নাঈম হাসান তিনটি এবং খালেদ আহমেদ ও আরাফাত সানি প্রত্যেকে নেন একটি করে উইকেট।