সরকার পতনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালক। ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে বোর্ড গঠন হলেও অল্প কিছু পরিচালক দিয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গঠনতন্ত্রের ম্যারপ্যাঁচে নির্বাচনও দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে সংকট কেটে গেছে। টানা তিনটি সভায় আত্মগোপনে থাকা বিসিবির পরিচালকরা অংশ নেননি। এতেই তাদের পরিচালক পদ শূন্য হয়ে গেছে। সোমবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বিসিবির কাছে চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছে।
এদিন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনের কাছে পাঠানো হয়। সেখানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবির কাছে জানতে চেয়েছে পরপর তিন সভায় কোন পরিচালকেরা অনুপস্থিত ছিলেন।
বিসিবির গঠনতন্ত্রের ১৫(২) এর ধারা অনুযায়ী, শারীরিক অসুস্থতা, বিদেশ গমন বা যথাযথ কারণ ছাড়া পরপর তিনটি বোর্ডসভায় অনুপস্থিত থাকলে তার পরিচালকের সদস্যপদ বাতিল হবে। আর ছয় মাসের মধ্যে তিনটি বোর্ডসভা না হলে এই কমিটিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। শূন্য পদ পূরণের লক্ষ্যে পরিচালনা পরিষদের অনুরোধক্রমে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং ওই পদ পূরণের জন্য অনুচ্ছেদ ১৩ অনুযায়ী উক্ত কমিশন শূন্যের সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন পরিচালনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
স্বাভাবিকভাবেই গঠনতন্ত্র মোতাবেক টানা তিন সভায় অনুপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট পরিচালক পদ শূন্যের বিষয়ে পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এনএসসির পাঠানো চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে শূন্যপদ পূরণে বিসিবি কী পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া চলতি মেয়াদে বিসিবির প্রতিটি সভায় পরিচালকদের উপস্থিতিও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর বিসিবির অনেক পরিচালক সক্রিয় নেই। বোর্ড সভা বা ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নেই এমন পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম তানভীর আহমেদ টিটো, নজিব আহমেদ, আ জ ম নাছির, ইসমাইল হায়দার মল্লিক, নাজমুল হাসান পাপন, শেখ সোহেল, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, মঞ্জুর কাদের, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। এদিকে আর চার জন পরিচালক পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। তারা হচ্ছেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজন ও জালাল ইউনুস। আহমেদ সাজ্জাদুল ববি পদত্যাগ না করলেও তাকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অব্যাহতি দিয়েছে। সভায় উপস্থিত না থাকায় তারও পরিচালক পদ শূন্য হয়ে গেছে!
এদিকে সক্রিয় পরিচালকের মধ্যে রয়েছেন নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ, নাজমুল আবেদীন ফাহিম, মাহবুব আনাম, ফাহিম সিনহা, মঞ্জুরুল আলম, আকরাম খান, সালাউদ্দিন চৌধুরী, কাজী এনাম আহমেদ ও ইফতেখার আহমেদ মিঠু। তাদের মধ্যে সভাপতি ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কোটা থেকে এসেছেন। মূলত জালাল ইউনুস ও সাজ্জাদুল আলম ববির রিপ্লেসমেন্ট হয়েছেন তারা। এরপর পরিচালনা পর্ষদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ।
সাধারণত বাংলাদেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো নিয়ন্ত্রণ করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। কিন্তু সেই অর্থে ক্রিকেটে সেভাবে নাক গলায় না তারা। কিন্তু এবার যেন খানিকটা সরব ভূমিকাতে তারা। এখন দেখার অপেক্ষা, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চিঠির পর কত দ্রুত শূন্য পদগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে বিসিবি!