পাওয়ার প্লেতে ৪৫ রান দিয়ে বাংলাদেশ ভারতের সাঞ্জু স্যামসন, অভিষেক শর্মা ও অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে ফেরায়। শুরুটা দারুণ ছিল। কিন্তু এই সময়েই মস্ত বড় ভুল করে ফেলে বাংলাদেশ, যার খেসারত দিতে হয়েছে দলকে। পঞ্চম ওভারে নিতিশ কুমার রেড্ডির ক্যাচ ফেলেন কিপার লিটন দাস। এই ভারতীয় ব্যাটারই বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হন। তাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে দুইশ ছাড়ায় এবং রেকর্ড ৮৬ রানে জেতে ভারত।
দিল্লিতে বুধবার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হার নিশ্চিতের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের পেসার বললেন, ম্যাচের শুরুতে নিতিশের ক্যাচ ফেলার মাশুল দিতে হয়েছে তাদেরকে। তাছাড়া শিশিরের কারণে তাদের স্পিনাররাও ভূমিকা রাখতে না পারায় প্রতিপক্ষের স্কোর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।
নিতিশ ও রিংকু সিং ৪৯ বলে ১০৮ রানের জুটি গড়েন। দুই ব্যাটারই হাফ সেঞ্চুরি করেন। ৫ রানে জীবন পাওয়া নিতিশ ৩৪ বলে ৭৪ রান করেন। তানজিম হাসান সাকিবের শর্ট ডেলিভারি তার গ্লাভস ছুঁয়ে লিটনের দিকে ছুটেছিল। কিন্তু তিনি বল ধরে রাখতে পারেননি।
তাসকিন বললেন, ‘ক্যাচ ফেলা সবসময় খারাপ, এর মাশুল দিতে হয়। বিশেষ করে তাদের মতো দলের বিপক্ষে, যারা বিশ্বের সেরা দল। ভুলের মাত্রা খুব ছোট, কিন্তু বড় খেসারত দিতে হলো।’
স্পিনাররা ৮ ওভার বোলিং করে ১১৬ রান দিয়েছেন। তাসকিন স্বীকার করলেন, এমন বাজে দিন তারা সচরাচর দেখেননি, ‘দেখেন, আমরা পাওয়ার প্লেতে ভালো করেছিলাম। কিন্তু পরে তারা ভালো ব্যাটিং করলো। দুর্ভাগ্যবশত স্পিনারদের জন্য বাজে দিন ছিল। সাধারণত এতটা বাজে দিন আমাদের দেখতে হয়নি। কিন্তু টি-টোয়েন্টি যে কোনও দিন যে কোনও কিছু হতে পারে। শিশিরের কারণে স্পিনাররা বল গ্রিপ করতে পারছিল না। আমরা ১১তম কিংবা ১২তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিলাম। তাদের যদি ১৮০ এর নিচে আটকাতে পারতাম, সেটা তাড়া করা যেতো।’
তাসকিন বললেন, বারবার বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থতার কারণ তারা দেশের মাটিতে ভালো পিচে খেলতে অভ্যস্ত নয়। তার দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন লিগে অংশ নিলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের খেলায় উন্নতি হবে।
তাসকিন বললেন, ‘তারা (ভারত) নিয়মিত ১৮০ থেকে ২০০ রান করে। আর আমাদের জন্য সেটা ১৩০-১৪০। আমাদের অভ্যাস নেই (বড় রান করার) এবং এটাই বাস্তবতা। আশা করবো আগামী দিনগুলোতে আমাদের হোম কন্ডিশন আরও ভালো হবে এবং আমরা বড় রান তাড়া করতে পারবো এবং ডিফেন্ডও করতে পারবো। তাছাড়া আমরা যদি বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে পারি, এটা হবে ভালো অভিজ্ঞতা। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো শক্তিশালী হলে ক্রিকেটও উন্নত হবে।’
তিনি আরও বললেন, ‘তারা (ভারতীয় ব্যাটার) স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের শট খেলে, ভুল ছোট হলেও। আমরা যদি তাদের মতো করে (স্কুপ ও ল্যাপ শটস) শট খেলার চেষ্টা করি, তাহলে মাথায় আঘাত লাগবে। তারা তাদের ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ভালো উইকেটে খেলার কারণে দক্ষ হয়ে উঠেছে।’
ভালো উইকেট তৈরি করার সিদ্ধান্ত বোর্ডের ওপর ছেড়ে দিলেন তাসকিন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড। আমরা ইতোমধ্যে বোর্ডকে (ভালো উইকেট প্রস্তুতির ব্যাপারে কিউরেটরকে ব্যবস্থা নিতে) জানিয়েছি এবং তারা এটা নিয়ে ভাবছে।’