ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সচিব পদে জয় শাহর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে মে মাসে, আর সভাপতি পদে সৌরভ গাঙ্গুলীর মেয়াদ শেষ হতো আগামী ৭ জুলাই। তবে বাড়তি কয়েকটি দিন তারা পদে থাকতে পারছেন। কারণ গঠনতন্ত্র সংশোধন করে তাদের মেয়াদ ছয় বছর করার জন্য গত এপ্রিল মাসে করা আবেদনের ওপরে শুনানি সুপ্রিম কোর্ট পিছিয়ে দিয়েছে দুই সপ্তাহ। আজ বুধবারই হওয়ার কথা ছিল শুনানি। সৌরভ ও শাহ গত অক্টোবরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দুই শীর্ষ পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন গত অক্টোবরে।
লোধা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা ও বোর্ড মিলিয়ে টানা ছয় বছর হয়ে গেলেই কোনও পদাধিকারীকে তিনবছরের বাধ্যতামূলক বিশ্রামে যেতে হবে। সেই হিসেবে গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন ও বোর্ড মিলিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তনয় জয়ের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে মে মাসে। আর পশ্চিমবঙ্গের ক্রিকেট সংস্থা সিএবির পদ ও বোর্ড মিলিয়ে সৌরভের মেয়াদ শেষ হবে ২৭ জুলাই। তবে শুনানি দুই সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ায় আপাতত বাড়তি কিছুদিন তারা বিসিসিআইয়ের শীর্ষ পদে থাকতে পারছেন। সৌরভ বাড়তি সময় পাচ্ছেন এক সপ্তাহ। দুই সপ্তাহ পর সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে যদি বোর্ডের আবেদন গৃহীত হয়, তাহলে থেকে যেতে পারবেন ২০২৫ সাল পর্যন্ত।
বিসিসিআইয়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তা মনে করেন, লোধা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী চেয়ারে বসার সঙ্গে সঙ্গেই সৌরভের বোর্ডের মেয়াদ কার্যত শেষ হয়ে যায়। তারা বোর্ডে এসেছেন গত অক্টোবর, সবমিলিয়ে গেছে নয় মাস, কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারিই তো কেড়ে নিলো চার মাস। এই জন্য বোর্ড সুপ্রিম কোর্টের কাছে এপ্রিল মাসে আবেদন জানিয়ে রাখে বোর্ডের সভাপতি-সচিবের ক্ষেত্রে পদে বসার পর তাদের মেয়াদ বাড়িয়ে ছয় বছর করা হোক। ক্রিকেট মহলের অনেকের ব্যাখ্যা, ‘বোর্ডে যেতে গেলেও রাজ্য সংস্থায় একজন কর্মকর্তাকে কিছু সময় কাটিয়ে যেতে হয়। তা না হলে অভিজ্ঞতা হবে কীভাবে? লোধা কমিশনের নিয়ম মানতে গেলে তো একসময় অভিজ্ঞ ক্রিকেট সংগঠকই পাওয়া যাবে না।’
ভারতের ক্রিকেট বোর্ডে লোধা সংস্কার হয়েছিল কিছু কর্মকর্তার দীর্ঘদিন ক্ষমতা আঁকড়ে পড়ে থাকার জের ধরে। রাজ্য সংস্থা ও বোর্ড মিলিয়ে এন শ্রীনিবাসনের মতো কিছু কর্মকর্তা ৩০-৩৫ বছর ধরেও ক্ষমতাসীন ছিলেন। আর সেই সুবাদেই তৈরি হচ্ছিল কায়েমি স্বার্থের জাল। আইপিএলে স্পট-ফিক্সিংয়ের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। শ্রীনিবাসনকে বোর্ড থেকে সরে দাঁড়াতে হয়। লোধা কমিশনের সুপারিশে সংস্কার আসে বোর্ডে। সৌরভের কমিটি আসার আগে দীর্ঘদিন বিসিসিআই পরিচালিত হয়েছে আদালত নির্দেশিত কমিটি অব অ্যাডমিনস্ট্রেটর্স (সিওএ) দিয়ে।