প্রথমবারের মতো মা-বাবা হয়েছেন বা হতে যাচ্ছেন এমন দম্পতিদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা ও সঠিক নির্দেশনার প্রয়োজন হয়। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের নেতৃত্বে, সেভ দ্যা চিলড্রেন এবং জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় বাংলাদেশে কাজ করে চলেছে – সংযোগ প্রকল্প। এই বহুদেশীয় প্রকল্পটি নোয়াখালী এবং মাদারীপুর জেলার মোট ৮টি উপজেলায় গবেষণামূলক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। পুরো সময় জুড়ে সংযোগ প্রকল্প অত্যন্ত সুচারুভাবে ও দক্ষতার সাথে বেশ কিছু গবেষণা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে— Barrier and Facilitator Analysis , PNC Expectation vs. Reality Study , Rapid Survey , Impact Evaluation , এবং Realist Evaluation ।
সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে হোটেল শেরাটনে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য, ফলাফল এবং অভিজ্ঞতা আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে শেয়ার করা হয়।
দুটি তথ্যবহুল উপস্থাপনার মাধ্যমে এই বিষয়গুলো অতিথিদের কাছে তুলে ধরেন— ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ডেপুটি ডিরেক্টর, আরসিএইচ, সিআইপিআরবি এবং বিধান কৃষ্ণ সরকার, অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট, আইসিডিডিআর,বি। এরপর সংযোগ প্রকল্পের সার্বিক বিষয়াবলী নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক মুক্ত আলোচনা পরিচালনা করেন— ডা. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার, লাইন ডাইরেক্টর, ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রোগ্রাম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর।
এছাড়াও, অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন ডা. এস এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ, লাইন ডিরেক্টর, এমএনসি অ্যান্ড এএইচ, স্বাস্থ্য অধিদফতর; মো. তসলিম উদ্দিন খান, পরিচালক, আইইএম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর; সাবিনা পারভীন, পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর, পরিকল্পনা ইউনিট, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর; মো. এনামুল হক, পরিচালক, অর্থ বিভাগ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর; মীর সাজেদুর রহমান, প্রশাসন বিভাগ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর; ডা. মো. সুলতান আহমেদ, পরিচালক, এমসিএইচ সার্ভিসেস, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর; রিফাত বিন সাত্তার, ডিরেক্টর, প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি, সেভ দ্যা চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ।
সেভ দ্যা চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি বিভাগের ডিরেক্টর রিফাত বিন সাত্তার তার বক্তব্যে বলেন- “সংযোগ প্রকল্পটি মামণি প্রকল্পের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের দুইটি জেলায় বাস্তবায়ন করা হয়। আমরা আশা করছি সংযোগ প্রকল্পের পাইলটিং থেকে প্রাপ্ত তথ্য আমরা আমাদের অন্যান্য প্রকল্প এলাকাতেও বাস্তবায়ন করতে পারবো। এছাড়া সরকারও এই তথ্য ও ফলাফল বিভিন্ন নীতিনির্ধারণ ও প্রকল্পের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারবে।”
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রোগ্রামের (সিসিএসডিপি) লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “যদিও সংযোগ প্রকল্পটি এপ্রিলে শেষ হয়ে যাবে কিন্তু এটি হতে প্রাপ্ত ফলাফল ও তথ্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থা ও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেবা দানকারীদের মাধ্যমে প্রসব পরবর্তী পর্যায়ে মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। সরকারের সীমিত লোকবলের সাহায্যেও এই প্রকল্পের অর্জনগুলোর প্রভাব ধরে রাখতে সক্ষম হবে।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী, মহাপরিচালক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “সংযোগ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে প্রথমবারের মতো বাবা-মা হওয়া দম্পতিদের প্রসব পরবর্তী সেবা ও পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে এটি নিবিড়ভাবে কাজ করেছে। আমরা আশা করি, গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তিনটি প্রেজেন্টেশনের তথ্যগুলো ও ফলাফল সরকারের নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে।”
উপস্থিত বক্তারা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা সংযোগ প্রকল্পের গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো মা-বাবা হওয়া অল্পবয়সী দম্পতিদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের মাধ্যমে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন।