রাজধানীর উত্তরার ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল প্রাঙ্গণে ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্শন স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত চতুর্দশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াডে পুরস্কার পেলো ১৪৮ জন। গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরায় ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল প্রাঙ্গণে চতুর্দশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মোহাম্মদ আজম।
বাংলা কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছে চার জন, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় তিন জন, রচনা প্রতিযোগিতায় তিন জন, উপস্থিত বক্তৃতায় একজন, দলীয় নাচের প্রথম স্থান অর্জন করেছে এ ক্যাটাগরিতে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বাংলাদেশ এবং বি ক্যাটাগরিতে মাস্টারমাইন্ড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল। এ ছাড়া কবিতা আবৃত্তিতে তিন জন এবং সংগীতে ছয় জন প্রথম পুরস্কার পেয়েছে। প্রতি বছরের মতো সারা দেশের ৮০টি স্কুলের দেড় সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এবারও ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্শন স্কুলের বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় প্রতিযোগীরা রচনা লেখা, আবৃত্তি, নাচ, গান, অঙ্কন, কুইজ এবং উপস্থিত বক্তৃতা বিষয়ে বয়সভেদে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আদিলুর রহমান খান বলেন, এদেশের মানুষ নিজেদের মর্যাদা রক্ষার জন্য জীবন দিয়েছে, ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। আমাদের উচিত হবে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা তৈরি করা, মানুষের মধ্যে বৈষম্য দূর করা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, বাংলা অলিম্পিয়াড নিজের বৈশিষ্ট্যেই বিশিষ্টতা অর্জন করেছে। বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ আমার দায়িত্ব। ভাষা নিয়ে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট মাসে আবেগ প্রকাশ করা ভাষাচর্চার জন্য যথেষ্ট নয়। মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যদি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চায় এগিয়ে আসে, তাহলে দেশের জন্য বিরাট উপকার হবে, মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ বৃত্ত শ্রেণি উপকৃত হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ-এর প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন এবং চেয়ারম্যান টিমোতি ডোনাল্ড ফিশার। ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের চেয়ারম্যান টিমোতি ডোনাল্ড ফিশার বলেন, ‘বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাস নিয়ে আমাদের বাংলা অলিম্পিয়াড। আমরা এ দেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে চাই।’
ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন বলেন, ‘এরই মধ্যে বাংলা অলিম্পিয়াড ইংরেজি স্কুলগুলোর জন্য একটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। শুধু জাতীয় নয়, আমি বলবো, বাংলা অলিম্পিয়াড ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। প্রতি বছরই দেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলের বিদেশি শিক্ষার্থীরাও বাংলা অলিম্পিয়াডে যোগ দিচ্ছে।’
এ বছরও অন্যান্য বারের মতো প্রতিযোগিতায় উপদেষ্টা ও বিচারক হিসেবে ছিলেন শিক্ষাবিদ, লেখক ও শিল্পীবৃন্দ। বিচারক হিসেবে ছিলেন সংগীতশিল্পী সুজিত মোস্তফা, শাহীন সামাদ, প্রিয়াঙ্কা গোপ, তানভীর আলম সজীব, আজিজুর রহমান তুহিন, নৃত্যশিল্পী জুয়াইরিয়া মৌলি, শান্তা শাহরিন, চিত্রশিল্পী আলপ্তগীন প্রমুখ।