সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সংস্কারের দাবিতে অনশনে বসেছেন সরকারি চাকরি প্রত্যাশীরা। বৃহস্পতিবার থেকে চলমান এই অনশনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে পিএসসির সংস্কার চেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে অনশনরতদের সাথে সংহতি জানাতে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেখানে যান। সেখানে সংহতি প্রকাশ করে সারজিস আলম বলেন, ‘আজ থেকে ৮ মাস আগে এই শেঁকড় থেকেই আন্দোলন শুরু হয়ে সরকারকে পতন ঘটিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘যে সহযোদ্ধাদের সঙ্গে আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছি, আজ কেন অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে তাদের আন্দোলন করতে হবে। যে চাকরিতে সংস্কারের জন্য আন্দোলন করে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলো হলো অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে তো সেই চাকরিতেই আগে মনোযোগ দেওয়ার দরকার।’
প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত আবেদ আলী প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আবেদ আলী কখনও একা আবেদ আলী হতে পারে না। তার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত ছিল। তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। বিগত ১৬ বছরে পিএসসির উপর অনেক রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ দেখেছি। বিসিএসে এই রাজনৈতিক খেলা বন্ধ করতে হবে।’
যারা চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়ে সুবিধা নিয়েছে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘বিসিএসে রাজনৈতিক খেলা বন্ধ করতে হবে। পিএসসির সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর যারা আক্রমণ করেছে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
এসময় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘২০১৮ সালে যখন কোটা সংস্কারের আন্দোলন চলে, তখন থেকেই আমাদের এই দাবি। ৫ আগস্টের পর ৮ মাস পার হয়ে গেলেও আমরা কোনও যৌক্তিক সংস্কার দেখতে পারছি না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) ১২টা থেকে অনশন বসেছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। ৪০ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের মাধ্যমেই এই রাষ্ট্র গঠিত হলেও পিএসসি সংস্কার হচ্ছে না। বেকারদের নিয়ে কোনও সংস্কার নাই।’
এদিন আওয়ামীলীগের নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে ইনকিলাব মঞ্চের শহীদি মার্চেও আসেন এনসিপির কেন্দ্রীয় এই নেতা। সেখানে সারজিস আলম বলেন, ‘আজ শাহবাগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি নিয়ে দাঁড়ানো হয়েছে, সেটা ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে পূরণ হওয়ার কথা ছিল। আমরা যখনই সরকারের কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তারা আমাদের পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়। যখন শাপলা চত্বর, পিলখানা এবং জুলাইয়ে হাজারও মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল?’
সারজিস বলেন, ‘এই জেনারেশনকে ভয় করুন। যদি এই জেনারেশনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আবেগ নিয়ে খেলা করেন, তাহলে এই জেনারেশন সকল ক্ষমতার বিপক্ষে গিয়ে যে কাউকে টেনে-হিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারে।’