‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ মঞ্চের পক্ষ থেকে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রা ও প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) একাংশ। হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি করেছে বাসদ।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাত ৯টায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ) দফতর সম্পাদক অরুপ দাস শ্যামের সই করা একটি বিবৃতিতে এ দাবি জানায় দলটি।
প্রতিবাদ জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘অব্যাহত নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সারা দেশে চলছে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন। বর্তমান সমাজের পরিস্থিতি আজ এই জায়াগায় এসে দাঁড়িয়েছে যেখানে একজন বাবাও তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। রেহাই পায় না ৮ বছরের শিশুও। মানবসভ্যতার জন্য এ এক গভীর অপমান। এর বিরুদ্ধেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে সারা দেশের মানুষ। এক নদী রক্ত পেরিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে অন্তত মানুষ নারীর প্রতি এই বর্বরতা মেনে নিতে চায়নি। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ স্বপ্ন দেখেছে একটি গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন সাম্যের বাংলাদেশের। কিন্তু আমরা অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে লক্ষ্য করছি এই সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়ংকর রকম নাজুক হয়ে দাঁড়িয়েছে। একের পর এক অব্যাহত নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা গোটা দেশকে স্তব্ধ করেছে। এসবের বিরুদ্ধে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছিনা। বরং আজ আমরা আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ হামলা করেছে।’
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘আজ যখন আন্দোলনকারীরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিতে চাইলেন, সেখানে তাদের আটকানো হলো এবং অতর্কিতে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করা থেকে শুরু করে সেই পুরনো কায়দায় পুলিশি আক্রমণ। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ইডেন কলেজের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া শাইনা, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মেঘমল্লার বসুসহ আরও অনেকেই এই হামলায় আহত হয়েছেন।’
‘আমরা দেখেছি কী করে পুলিশের সহকারী কমিশনার মামুন নারী শিক্ষার্থী সুমাইয়া শাইনার ওপর বর্বর আক্রমণ করেছে। একজন নারী যদি তার নিরাপত্তা চাইতে রাষ্ট্রের কাছে যান তবে কী তার সঙ্গে এই ধরণের নির্লজ্জ আচরণ করা হবে? এই কী নতুন বাংলাদেশ? এই কী জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা? শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ আনাস, শহীদ নাঈমাসহ দুই হাজারেরও বেশি ছাত্র জনতা এই দিন দেখবার জন্য প্রাণ দান করেছিলেন? সারা দেশের মানুষ এজন্য লড়াই করেছে?’
বিচার চেয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জনগণের নিরাপত্তা দিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। আজ ঘটে যাওয়া এই পুলিশি আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িত এসি মামুনসহ সবার বিচার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই।’