ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়েছে দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। সোমবার (২১ অক্টোবর) সেগুনবাগিচায় বিএমএ ভবনের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন সভাকক্ষে এই গোলটেবিলে রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ করেন দলের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
সভায় অংশগ্রহণ করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, বরকতুল্লাহ ভুলু, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরাম আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত কাইয়ূম ও এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।
এছাড়া আলোচনা করেন জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ) সদস্য সচিব ফারুক আহমাদ, জানিপপের প্রধান নির্বাহী ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক নাসীরুদ্দিন পাটোয়ারী প্রমুখ।
‘ফ্যাসিস্ট, দুর্নীতিবাজ ও গণহত্যায় জড়িতদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা এবং সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচনব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের সংস্কার কার্যক্রমের ধরন ও প্রক্রিয়া কী হবে এবং কতদিনের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে, তা অতি দ্রুত প্রকাশ করবে এবং জাতীয় নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।’
২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন সম্পর্কে রেজাউল করিম বলেন, ‘তিনটি অবৈধ ও প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনাকারী তিনটি নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা তাদের অবৈধ কাজের কুশীলব ছিল, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ অবৈধ নির্বাচনের সাহস না করে।’
লিখিত বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের আমির উল্লেখ করেন, এ মুহূর্তে মৌলিকভাবে দুটি বিষয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠতে পারে। এক. পতিত ফ্যাসিস্ট, গণহত্যাকারী, লুটেরা ও দুর্নীতিবাজদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা। দুই, একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও যথাযথ প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা।
‘এ ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছে। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেও আমরা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির নির্বাচন বিষয়ে জোরালো দাবি জানিয়েছিলাম। তখন যদি এ পদ্ধতি চালু করা হতো—তাহলে হয়তো আওয়ামী লীগের মতো একটি দল এভাবে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী হওয়ার সুযোগ পেতো না। আশার বিষয় হলো, এখন বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এবং সিভিল সোসাইটির বেশিরভাগই সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবি জানাচ্ছে।’