এক জাতিকে অন্য জাতির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটের পরিপন্থী বলে দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের সই করা এক বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে বলে, জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমরা মনে করি, যেকোনোভাবে জাতিগত বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বাংলাদেশের জনগণকে, এক জাতিকে অন্য জাতির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটের পরিপন্থী।
‘পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের এক গভীর চক্রান্তের শিকারে পরিণত করার পাঁয়তারা চলমান বলে অভিযোগ করে নাগরিক কমিটি বলে, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে তার জায়গা থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি। জাতীয় সার্বভৌমত্বের অখণ্ডতা যেন হুমকির মুখে না পড়ে, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তা বিবেচনায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছে নাগরিক কমিটি।
‘জাতীয় নাগরিক কমিটি বাংলাদেশের সব জাতিসত্তাকে সম্মান করে এবং সবার অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বদ্ধপরিকর বলে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে চলমান সহিংসতা বন্ধ করতে হবে এবং বিবদমান উভয় পক্ষের মধ্যে দাঙ্গা ঠেকাতে হবে।
‘দেশের প্রত্যেক নাগরিক, তিনি যে জাতিসত্তারই হোন না কেন, তার জানমালের নিরাপত্তা প্রদান সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা সরকারকে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে উসকানিদাতা ও দোষীদের শনাক্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিহত পরিবারদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসার মতো মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
‘উদ্ভূত পরিস্থিতিসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধানে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছে নাগরিক কমিটি বলে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা রাজনৈতিক; এর সমাধানও রাজনৈতিক হতে হবে। সব জাতিধর্মের মানুষের সমান অধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে একটি সুসংহত রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি কাজ করে চলেছে।
‘এ মুহূর্তে পার্বত্য চট্টগ্রামের সহিংস পরিস্থিতির আশু সমাধান দরকার বলে আমরা মনে করি। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সংলাপ ও রূপরেখা প্রণয়নের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়া হলে জাতীয় নাগরিক কমিটি তাতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।’