কারাবিধি অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইফতারে বরাদ্দ মাত্র ৩০ টাকা। এই টাকা দিয়ে পাওয়া খাবার দিয়েই প্রতিদিন ইফতার করতে হচ্ছে তাকে। দলীয় চেয়ারপারসনের এই কষ্টকর অভিজ্ঞতায় ব্যথিত বিএনপি তার প্রতি সম্মান জানাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদেরও আজ ৩০ টাকার সমমূল্যের খাবার দিয়ে ইফতার করিয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় ইস্কাটন লেডিস ক্লাবে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি।
৩০ টাকার ইফতারে আইটেম হিসেবে ছিল ছোলা, বেগুনি, পেঁয়াজু, খেজুর, আলুর চপ, মুড়ি ও পানি।
ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা যখন আজকে এখানে সমবেত হয়েছি তখন বিএসএমএমইউ হাসপাতালের ছোট একটি কক্ষে খালেদা জিয়া তার ইফতার গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছেন। তার ইফতারের জন্য সরকারি বরাদ্দ মাত্র ৩০ টাকা। সেই জন্য আমরা আজকে যে ইফতারের আয়োজন করেছি, তা ৩০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ করেছি।
ইফতারে আগত অতিথিদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি আগত অতিথিদের কাছে অনুরোধে জানাবো কষ্ট হলেও তা আন্তরিকভাবে স্বীকার করে নেবেন। শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান রেখে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আজকে আমরা এই আয়োজন করেছি।
খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম করেছেন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে সেই নেত্রীকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের ইফতার ও দোয়া সবটুকু নিবেদন করতে চাই খালেদা জিয়া, হাজার হাজার নেতাকর্মী, যারা কারাগারে বন্দি আছেন তাদের প্রতি।
আজকে জগদ্দল পাথরের মতো একটি জগদ্দল সরকার বুকের ওপর চেপে বসেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্পন্ন গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আমরা একটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আজকে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে চাই, তিনি যেন মানুষকে শক্তি দেন, যাতে তারা তাদের অধিকার আদায় করতে পারেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যও আল্লাহর কাছে দোয়া চাই।
ইফতার মাহফিলে অংশ নেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরামের নেতা আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মহসিন রশিদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, আফসারী আমিন আহমেদ, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, এসএম আকবর, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী, শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ।
২০ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে অংশ নেন জামায়াতে ইসলামীর ডা. শফিকুর রহমান, হামিদুর রহমান আজাদ, আবদুল হালিম, তাসনীম আহমেদ, সেলিমুদ্দিন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এর মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, খেলাফত মজলিশের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইসহাক, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এমএম আমিনুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, ন্যাপের এমএন সাওন সাদেকীন প্রমুখ।
পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে অংশ নেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক শরীফউদ্দিন।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে অংশ নেন ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল মান্নান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, নিতাই রায় চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফরহাদ হালিম ডোনার, ফজলুর রহমান, নাজমুল হক নান্নু, আবদুর রেজ্জাক খান, জিয়াউর রহমান খান, শাহিদা রফিক, বিজন কান্তি সরকার, আবদুল হাই শিকদার, খায়রুল কবির খোকন, এসএম ফজলুল হক, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মফিকুল হাসান তৃপ্তিসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।