বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সীমাবদ্ধতা থাকলেও প্রবাসীদের ভোটাধিকার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। আমরা মনে করি, অনুশীলনের মাধ্যমে ত্রুটি দূর করা সম্ভব।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেলা পৌনে ৩টায় নির্বাচন কমিশন অডিটোরিয়ামে ‘সেমিনার অন ডেভেলপমেন্ট অব ভোটিং ফর ডায়াস্পোরা বাংলাদেশিস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিনিধি দলে নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগের সঙ্গে বিএনপি একমত। কারণ এ দাবি আমরা আগে একাধিকবার উত্থাপন করেছি। তবে ইসির পক্ষ থেকে নেওয়া অনলাইন, পোস্টাল ও প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতির মধ্যে যা সবচেয়ে সহজ ও গ্রহণযোগ্য হয়, আমরা সেটি বিবেচনার কথা বলেছি।’
সকাল পৌনে ১০ শুরু হওয়া সেমিনারে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সিনিয়র সাংবাদিক ও নির্বাচন কমিশনারসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে আরপিও সংশোধনী নিয়ে আমরা যখন কথা বলেছি, তখন প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়টি আমরাই সবার আগে প্রস্তাব দিয়েছি। পরবর্তীকালে ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন নিয়ে যে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেখানেও আমরা সে বিষয়টি উল্লেখ করেছি। এছাড়াও বিএনপির পক্ষ থেকে ২০২২ সালের ২৭ দফা ও ২০২৩ সালের ৩১ দফায়ও এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘কোনও বিষয়ই সম্পূর্ণ সঠিক হয় না। আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন সবচেয়ে বেশি সহজ, গ্রহণযোগ্য ও সবচেয়ে সাশ্রয়ী পদ্ধতিকেই এক্ষেত্রে বেছে নেবে। তারপরও কমিশনের দেওয়া ১৫ দিন সময়সীমার মধ্যেই দলীয় ফোরামে আরও আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধনী দেবে বিএনপি।’
তিনি বলেন, ‘কোন প্রবাসী স্থায়ীভাবে সংশ্লিষ্ট দেশে থেকে যান, আর কারা ফিরে আসছেন— সে তথ্যগুলোর হিসাব রাখতে হবে। কোন দেশে কতজন আছে সে তালিকা করতে হবে। শুধু এনআইডি নয় পাসপোর্টের মাধ্যমেও ভোটের সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ অনেক প্রবাসীর এনআইডি কার্ডও নেই।’ তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর বছর উচ্চবিত্তরা টাকা পাঠাননি। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকরা ঠিকই টাকা পাঠান। অথচ তাদেরকে মর্যাদা দেওয়া হয়নি।’ তাদের ভোটাধিকারের সুযোগ দিয়ে দেশের উন্নয়নের অংশীদারের মর্যাদা দিতে হবে।’
সেমিনারে আরও যেসব রাজনৈতিক নেতা অংশগ্রহণ করেন
সেমিনারে বিএনপির প্রতিনিধি দল ছাড়াও অংশগ্রহণ করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকে জসীম উদ্দিন সরকার, বাংলাদেশের লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল ইসলাম, মহাসচিব অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চান, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. খালেদ, শরীফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান আলী সাজু মল্লিক, শেখ ছালাহউদ্দিন ছালুর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি এনপিপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান দেওয়ান, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক সম্পাদক মনির উদ্দিন পাপ্পু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির ঢাকা মহানগর সমন্বয়ক কামাল পাটোয়ারী, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাবর চৌধুরী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের অতিরিক্ত মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান প্রমুখ।