বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমানে দেশে একটি অস্থিরতা চলছে। কিছু নির্ধারিত বিষয় অনির্ধারিত ও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তা সমাধানে দরকার রাজনৈতিক ঐক্য। এর মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব পাবো।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আবদুল্লাহ প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা মানুষকে শুধু দিয়ে যান, রাজনীতিকে দিয়ে যান— তাদের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন আবদুল্লাহ আল নোমান। আজ তিনি আমাদের মধ্যে নেই। তিনি চলে গেলেও আমাদের জন্য রেখে গেছেন তার কাজগুলো। তা স্মরণ করলে আমরা সবাই উপকৃত হবো।
ফখরুল বলেন, আজকেই মনে হয়, তাকে আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার ছিলে। কারণ জাতি একটি সন্ধিক্ষণ অবস্থায় আছে। যখন আমরা একটি অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে আছি, ফ্যাসিবাদী হাসিনাবিরোধী একটি বিস্ফোরণ হয়েছে। হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আমরা মনে করি, এই পরিবর্তনের সময়গুলোই হচ্ছে সবচেয়ে জরুরি সময়। জনমতকে সঠিক পথে প্রবাহিত করা অত্যন্ত জরুরি কাজ। আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন সেই মাপের একজন মানুষ। যিনি সবচেয়ে প্রতিকূল পরিবেশেও আন্দোলন তৈরি করতে পারতেন। মানুষকে একত্রিত করার ক্ষমতা তার ছিলে। সেজন্য আজ বারবার তার কথা মনে পড়ছে। বিএনপি নিয়ে শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ও তারেক রহমান যে স্বপ্ন দেখছেন, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অবশ্যই আব্দুল্লাহ আল নোমানের শূন্যতা অনুভব করি।
ফখরুল বলেন, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের একজন ছাত্রনেতা জাহিদুল পারভেজকে হত্যা করা হয়েছে। এই সময়ে যারা তার মতো একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, আমি বিশ্বাস করি, তারা দেশের পরিবর্তনের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। যারা বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তারা কখনই বাংলাদেশের পক্ষের মানুষ নন।
মির্জা ফখরুল আব্দুল্লাহ আল নোমানের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করেন এবং তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই— গণতন্ত্র বা নির্বাচন নিয়ে কোনও ষড়যন্ত্র হলে বিএনপি আবারও রাজপথে আন্দোলন করবে।
রাজনীতি এবং শ্রমিক আন্দোলন এক সঙ্গে করেছেন নোমান। তার সঙ্গে পরিচয়ের প্রথম দিন থেকে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। কারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল তার প্রবল। তিনি শ্রমজীবী মানুষকে খুবই ভালোবাসতেন। এ জন্য শ্রমিক অঙ্গনে তিনি ছিলেন শ্রদ্ধার আসনে। চট্টগ্রামে তিনি বহু নেতা তৈরি করেছেন। মৃত্যুর দিনেও চট্টগ্রামে একটি জনসভায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার আদর্শের শ্রমিক দলকে গড়ে তুলতে পারলে তার প্রতি আরও শ্রদ্ধা জানানো হবে।
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখতেন শহীদ জিয়া আবদুল্লাহ আল নোমান তা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন।