দীর্ঘ সাত বছর পর পরিবারের সঙ্গে মুক্ত পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। লন্ডনে তাকে পেয়ে তার পরিবারে যোগ হয়েছে আনন্দের নতুন মাত্রা।
ঈদে পরিবারে সদস্যদের নিয়ে একটি ছবি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছেন খালেদার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে উচ্ছ্বাসিত মন্তব্য করছেন নেতাকর্মীরা।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে তারেক রহমানের পরিবার ছাড়াও সেখানে রয়েছেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং তার দুই মেয়ে। পরিবারের সাথে একান্তে দিনটি কাটাবেন তিনি। এদিন লন্ডনে তার কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই।
অবশ্য বিএনপির মিডিয়া উইংসের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন সেখানে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি জানান, সর্বশেষ ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। তখন তিন মাস বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন। ওই বছরের ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত ঈদুল আজহা পরিবারের সাথে উদযাপন করেন।
২০১৮ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। ওই বছরে তার দুটি ঈদ কারাগারে একটি কক্ষে কাটে। অবশ্য ঈদের দিন কারাগারে তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
২০১৯ সালে কারাবন্দি অবস্থায় রাজধানীর বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। সেখানে একটি কক্ষে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই কক্ষেই তার ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা কাটে। হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সাথে কিছু সময়ের জন্য সাক্ষাতের অনুমতি পেয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা।
করোনাকালে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। করোনায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় কোয়ারেন্টাইন মেনে এক কক্ষের মধ্যে ওই বছরের দুটি ঈদ কাটে তার। ২০২১ সালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এভার কেয়ার হাসপাতালের কেবিনে ঈদুল ফিতর কাটে খালেদা জিয়ার। আর ঈদুল আজহা কাটে ফিরোজায়।
একই নিয়মে ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে গৃহবন্দি অবস্থায় ফিরোজায় ছয়টি ঈদ উদযাপন করেন তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তার সঙ্গে ঈদ করতে কয়েকবার লন্ডন থেকে দেশে এসেছিলেন ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান ও তার দুই কন্যা। এ ছাড়াও ঈদের দিন দলের সিনিয়র নেতারা দেখা করতে যেতেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতির মুহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের আদেশে কারামুক্ত হন খালেদা জিয়া।
প্রসঙ্গত, উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেখানে ৮ থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বর্তমানে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় এসে চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।