এক-এগারো থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের পুরো ১৬ বছরের শাসনামলে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। পাশাপাশি দলটির সিনিয়র নেতারা বলেছেন যথাসম্ভব সংস্কার কার্যক্রম করে নিরাপদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘আপনারা নানা সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করতে চাই, অবিলম্বে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি সংসদে পাঠাবে।’
‘‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু জনগণের এখনও অধিকার পুরোপুরি ফেরত দেওয়া হয়নি, জনগণের ভোটের অধিকার ফেরত দেওয়া হয়নি। আমরা সেটা দিতে চাই। এত বড় একটি পরিবর্তনের পর স্বৈরাচারী সরকার যেসব অন্যায়, অত্যাচার, দুর্নীতি করেছে—অবিলম্বে তার বিচার চাই। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সব সেক্টর ধ্বংস করে গেছে শেখ হাসিনা।’ অনতিবিলম্বে সব সেক্টরে সংস্কার করতে হবে, যাতে মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে, নিজের ভোট দিতে পারে—সেই ব্যবস্থা করতে হবে’’- বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
মামলা প্রত্যাহারের দাবি
নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরে যত মামলা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করার দাবি করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। তার ভাষ্য, ‘বিগত ১৫ বছরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যাদের বিরুদ্ধে যত মামলা হয়েছে, সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে’
‘তারেকের কথা শোনেননি, শুনেছেন দাদাদের কথা’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, ‘আমরা শেখ হাসিনাকে বহুবার বলেছি, কেয়ারটেকার সরকার দেন। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বহুবার এ কথা বলেছেন, কিন্তু তিনি আমাদের কথা শোনেননি। তিনি শুনলেন দাদাদের কথা। আমাদের কথা শুনলে এভাবে পালিয়ে যেতে হতো না। এখন বলেন তিনি নাকি চট করে ঢুকে যাবেন? আসেন না! বিএনপির নেতাকর্মীরা গত ১৫/১৬ বছরের পুরনো জুতা একটাও ফেলে দেয়নি। সবগুলো উপহার দিতে চাই।’
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে নয়া পল্টনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি ও আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
আরও বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন।
এসময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিএনপি ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী।
আর পড়ুন:
সংস্কারে জনগণকে সম্পৃক্ত না করলে ফল পাওয়া যাবে না: তারেক রহমান