সংলাপের জন্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে আগামী বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই দাওয়াতের চিঠি নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় যান আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড.কামাল হোসেনের সই করা একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়। তা আমি অফিসিয়ালি গ্রহণ করি। সেই চিঠির জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ দিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে একটি অফিসিয়াল বক্তব্য আমার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের কাছে পাঠিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সংবিধান সম্মত সব বিষয় আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দ্বার সর্বদা উন্মুক্ত। তাই তারা যে আলোচনার জন্য সময় চেয়েছেন, তারাই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই আমন্ত্রণ চিঠিটি আমি সরাসরি ড. কামাল হোসেন সাহেবের হাতে তুলে দিয়েছি।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ‘আমরা ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছিলাম। তারপর তারা জানিয়ে দিয়েছিলেন খুব তাড়াতাড়ি বসবেন। আমরা কয়জন যাচ্ছি, কে কে যাচ্ছি সেই লিস্ট তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা তা আজকেই লিস্টটা দিয়ে দেবো। তারা আমাদের ১ নভেম্বর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’ জোটের ১৫ জনের মতো সদস্য সংলাপে যেতে পারেন বলে তিনি জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু সাত দফা না, সাত দফাসহ অন্যান্য বিষয় এবং বর্তমান যে ইস্যুগুলো আছে সব নিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রেক্ষাপট তৈরি করতে তাকে (প্রধানমন্ত্রী) অনুরোধ করবো। এজন্য তিনি যদি আমাদের কাছে কোনও সাহায্য সহযোগিতা চান, তা অবশ্যই আমরা করবো।’
মন্টু বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন সাহেব যেহেতু সংবিধান প্রণেতাদের অন্যতম, তাই তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যাটা দিতে পারবেন। বিষয়টা আমরা তার ওপরে ছেড়ে দিচ্ছি। তিনি আমাদের নেতৃত্ব দেবেন। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আছেন। আমরা তার কাছে আবেদন করবো জাতিকে এ সংকট থেকে রক্ষা করার। ’
পরে মন্টু প্রধানমন্ত্রী দেওয়া চিঠিটি সাংবাদিকদের পড়ে শোনান।
এর আগে গত রবিবার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে অর্থবহ সংলাপের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবর চিঠি দেন ড. কামাল হোসেন। এরপর সোমবার (২৯ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসবে। এই সংলাপে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দেবেন। সংলাপের দিন, সময় ও স্থান পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। এরপর সংসদে গিয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুকে ফোন করেন তিনি। ড. কামাল হোসেনের সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।