পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনায় সারা দেশে পরিবেশ অধিদফতর ২১ দিনে ২০৪টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৫৩৩টি মামলায় ৭ কোটি ৮৭ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পরিবেশ দূষণের দায়ে ৮৮টি ইটভাটার চিমনি ভেঙে কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে, আর ৫৬টি ইটভাটা বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়াও সাতটি ভাটার কাঁচা ইট বিনষ্ট করা হয়েছে। এসময়ে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের ছয় ট্রাক সিসা বা ব্যাটারি গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করে কারখানা বন্ধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানায়, ২ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন দূষণবিরোধী অভিযানে এসব জরিমানা আদায় করা হয়।
মন্ত্রণালয় জানায়, গত ৩ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে নিষিদ্ধঘোষিত পলিথিন উৎপাদন বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ২৬৯টি মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে ৫৩৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা ধার্য করে আদায়সহ আনুমানিক ৯৯ হাজার ১৩২ কেজি নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন জব্দ করা হয় এবং ৮টি পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সিলগালা করে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাত করার অভিযোগে সুনামগঞ্জ, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ১১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। এতে ২১টি মামলায় ৮৭ হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ১ হাজার ৬৬১ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়। সচিবালয় ও নিউ মার্কেট এলাকায় সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়।
অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে এ সময়ে ব্যাপক অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে আজ বৃহস্পতিবারও (২৩ জানুয়ারি) পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, নারায়ণগঞ্জ, মেহেরপুর ও ঢাকায় অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ছয়টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এতে ৪০টি মামলায় ১ কোটি ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ৮ জন মালিককে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একটি ইটভাটার কিলন ভেঙে কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। আর ১৭টি ইটভাটা বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ঢাকার রমনা এলাকায় কালো ধোঁয়া নির্গমনবিরোধী অভিযানে ছয়টি মামলায় ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আর ৯টি যানবাহনের চালককে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া খিলগাঁও, শাহজাহানপুর, গুলশান ও মোহাম্মদপুর এলাকায় নির্মাণ সামগ্রীর কারণে বায়ুদূষণের অভিযোগে ছয়টি মামলায় ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এদিন পাবনায় একটি চারকোল কারখানার বায়ুদূষণের দায়ে একটি মামলায় ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। শেরপুরে শব্দদূষণবিরোধী অভিযানে দুটি গাড়ির চালককে ৩ হাজার টাকা জরিমানা এবং সাতটি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদফতরের দূষণবিরোধী অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।