প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলাম ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এদিন তাদের আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মাইন উদ্দিন। মেহেরাজের আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। তবে হৃদয় মিয়াজী জামিন আবেদন করেনি। শুনানি শেষে বিচারক মেহেরাজের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের বনানী থানার পাবলিক প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ২৩ এপ্রিল দুপুরে গাইবান্ধা থেকে মেহেরাজকে গ্রেফতার করা হয়। ২৫ এপ্রিল তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ২১ এপ্রিল হৃদয় মিয়াজী রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। ২৩ এপ্রিল তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। আলোচিত এ হত্যা মামলায় ৪ জনকে রিমান্ড ও ২ জন দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
জানা যায়, জাহিদুল ইসলাম পারভেজ প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ১৯ এপ্রিল বিকাল ৪টার পর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ওই ঘটনার এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতে জাহিদুল ইসলাম পারভেজ নিহত হন। এ ঘটনার পরের দিন ২০ এপ্রিল পারভেজের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারীসহ আটজনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৯ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ মিডটার্ম পরীক্ষা দিতে যায়। পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের সঙ্গে পুরি-সিংগারার দোকানে আড্ডা ও হাসাহাসি করছিল। বিকাল ৩টায় ১ থেকে ৩ নাম্বার আসামি তার কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চাওয়ায় উভয়ের মাঝে তর্ক শুরু হয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকসহ প্রক্টর মীমাংসা করেন। বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা চুরি, চাকু, চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে পারভেজ ও তার বন্ধুদের ওপর হামলা করে। এতে পারভেজ মারাত্মক আহত হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে।