ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী এ অভিযোগ করেছেন।
মহানগর উত্তর ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী জানিয়েছেন, রাজধানীর দক্ষিণখান থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শেখ আবির আহমেদ। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এই নেতার বড় ভাই জোবায়ের আহমেদ সৌরভ ছিলেন দক্ষিণখান থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তাদের বাবা আবুল হোসেন দক্ষিণখান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় করা একাধিক হত্যা মামলার আসামি। শেখ আবির ও তার পরিবারের সদস্যদের এখন থাকার কথা জেলে। অথচ আবির মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদের গাড়িতে করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর উত্তর ছাত্রদলের দুজন নেতা জানিয়েছেন, শেখ আবিরকে দক্ষিণখান থানা ছাত্রদলের কমিটিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন সালাউদ্দিন। তাকে আসন্ন দক্ষিণখান থানা ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি করা হবেও গুঞ্জন আছে। এ ছাড়া আবিরসহ আরও কয়েকজনকে ছাত্রদলের কমিটিতে পদ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি আবিরের বাবার ব্যবসা-বাণিজ্য ও সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছেন সালাউদ্দিন।
দক্ষিণখান থানা ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, ‘শুধু আবির নয়, ঢাকা মহানগর উত্তরের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহাদুর রহমান শুভ এখন সালাউদ্দিনের মদতে ছাত্রদলের রাজনীতি করছেন উত্তরা পূর্ব থানায়। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা লিমন হোসেন লাদেনও এখন সালাউদ্দিনের লোক। সালাউদ্দিন তাকে উত্তরা ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি বানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অথচ লাদেন জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকানোর মিশনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার ছবিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ছাড়া সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মহানগর উত্তরের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় আরও অনেক ছাত্রলীগ নেতাদের পুনর্বাসনের অভিযোগ আছে। সালাউদ্দিন ছাত্রলীগ নেতাদের কাছ থেকে প্রাইভেটকার উপহার নিয়েছেন। দলীয় ফোরামে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
উত্তর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বলছেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক যেখানে মোটরসাইকেলে করে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন, সেখানে সালাউদ্দিন যান নিজস্ব প্রাইভেটকারে চড়েন। মাত্র আট মাসেই বদলে গেছে তার জীবনযাত্রা।
এ বিষয়ে মহানগর উত্তর ছাত্রদল সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শেখ আবির জিয়ার আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার দিনে সে জীবন বাজি রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তা ছাড়া ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও বিএনপির পক্ষে ভূমিকা রেখেছে। এমনকি বিএনপির নেতাদের সঙ্গে তাকে বিভিন্ন মামলার আসামি করা হয়েছে। সে কীভাবে ছাত্রলীগ হয় তা আমার বোধগম্য নয়। একটি মহল ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছে।’