বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ছাত্র-আন্দোলনের ১৫ জন সমন্বয়কের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থ ‘পনেরো সমন্বয়কের সাক্ষাৎকার’র প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর ফার্মগেটে দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) কার্যালয়ে এ আয়োজন শেষ হয়।
গ্রন্থটি নিয়ে প্রকাশক ইউপিএল জানায়, জুলাই-আগস্টের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই সাক্ষাৎকার সংকলন শুধু স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি বৈশ্বিক গণ-আন্দোলনের নথিপত্রেও একটি ব্যতিক্রমী সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হবে।
প্রকাশনা উৎসবে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খ্যাতিমান লেখক ও চিন্তক সলিমুল্লাহ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, গ্রন্থটির সম্পাদক শিবলী আজাদ এবং ছাত্র সমন্বয়ক ফারহান হাসান বর্ণ।
আলোচকরা বইটির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘পনেরো সমন্বয়কের সাক্ষাৎকার’ কেবল একটি সময়ের আন্দোলনের দলিল নয়, এটি এক ধরনের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চেতনার প্রকাশ।
বক্তাদের মতে, এই গ্রন্থ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের অনুপ্রেরণা যোগাবে।
তারা আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ছিল সর্বস্তরের মানুষের অভিন্ন স্বপ্নের প্রকাশ। চা দোকানদার থেকে শুরু করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পেশাজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনের শরিক হয়েছিলেন। লিঙ্গ বৈচিত্র্যের মানুষসহ সমাজের অবহেলিত অংশের সক্রিয় অংশগ্রহণও এই অভ্যুত্থানকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছিল। সবার কথায় উঠে আসা দরকার।
আলোচনায় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, এই অভ্যুত্থান ছিল শুধু স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ নয়, বরং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের আকাঙ্ক্ষা থেকেও উৎসারিত।
বক্তারা বলেন, আন্দোলনে যুক্ত থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং রাষ্ট্রের প্রতি তাদের ন্যায্য দাবি যথাযথভাবে আলোচিত ও মূল্যায়ন করা প্রয়োজন, যাতে এই ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানকে প্রকৃত সম্মান জানানো যায়।