মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বন্ধ শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের পর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন জনশক্তি রফতানিকারকদের কয়েকজন। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সাধারণ সদস্যদের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ইস্কাটন গার্ডেনে প্রবাসী কল্যাণ ভবন প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
স্মারকলিপিতে বায়রার সাধারণ সদস্যদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ প্রাধান্য দিয়ে স্বল্প ব্যয়ে নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে মালয়েশিয়াসহ সব বন্ধ শ্রমবাজার খোলার ব্যবস্থা করা হোক। দেশ ও কর্মীদের সার্বিক স্বার্থে সরকার যে পদ্ধতিতে শ্রমবাজার উন্মুক্ত করবে, বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক হিসেবে সেটা যথাযথভাবে অনুসরণ করে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবেন বায়রার সদস্যরা।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন— আল সুপ্ত ওভারসিসের মালিক ফরিদ আহমেদ মজুমদার, পূরবী ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, আর্থ স্মার্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, ইএমএস ইন্টারন্যাশনালের এএমএস সাগর, তাসনিম ওভারসিসের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, আল আকাবা অ্যাসোসিয়েটের মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বিশ্বাস, আল গিফারীর সাগর মাহমুদ, স্কাইল্যান্ড রিক্রুটিংয়ের মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আরমান এয়ার ইন্টারন্যাশনালের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাজ্জাম হোসেন, ফ্রিডম ওভারসিসের কফিল উদ্দিন মজুমদার, এসএফ গ্লোবালের হাওলাদার ফোরকান উদ্দিন ও দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।
জনশক্তি ব্যবসায়ীরা জানান, বায়রার সদস্যরা প্রতি বছর ১০ লাখের বেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান করেন। এর মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে তারা দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। সৌদি আরবের পর মালয়েশিয়া বাংলাদেশি-কর্মীদের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। মালয়েশিয়া সরকারের অভ্যন্তরীণ নীতির কারণে ২০২৪ সালের ৩১ মে তারিখের পর সব সোর্স কান্ট্রি থেকেই কর্মী নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য উল্লেখযোগ্য গন্তব্যস্থল সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারসহ অনেক দেশে শ্রমবাজার বন্ধ আছে বা খুবই স্বল্প পরিমাণে কর্মী যাচ্ছেন। ওসব দেশে শ্রমবাজার বন্ধ বা সংকোচনের কারণ এবং বাজার উন্মুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসগুলোকে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আবশ্যক।
এতে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি ১৪টি সোর্স কান্ট্রি থেকে মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য আগামী ২১ মে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ মিটিংয়ের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এই শ্রমবাজার যখন খুলবে— ঠিক তখেই এক শ্রেণির সুবিধাভোগী এবং নেতৃত্বলোভী বায়রার কিছু সদস্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি যাতে না খুলে, সে ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।