বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ভুক্তভোগীরা মানবপাচারের শিকার হচ্ছে। যেসব দালালের কারণে মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে মানবপাচার রোধ করা দুরূহ হবে। এজন্য মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের প্রথম সচিব এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞ গুইসেপ জিয়োভানি।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ফিরে আসা অভিবাসীদের আত্মীকরণের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘সবাই বলে ভূমধ্যসাগর একটি কবরস্থান। কিন্তু কারা এই মৃত্যুর জন্য দায়ী।’
ইতালি জীবন রক্ষা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিবাসীরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য অন্যদেশে যায় এবং সেটিতে কোনও সমস্যা নেই।’
ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি
ভাগ্যান্বষণে ইতালি যেতে চেয়েছিলেন মাদারিপুরের মো. বেলাল হোসেন। দালালকে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেও স্বপ্নের দেশে যেতে পারেননি। ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির কারণে ২৭-২৮ ঘণ্টা পানিতে ভেসে থাকার পর একটি ট্রলার তাকে উদ্ধার করে লিবিয়া নিয়ে আসে। পরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহায়তায় বাংলাদেশ ফেরত আসেন বেলাল হোসেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা ফেরত আসার প্রায় ১৬ মাস পার হলেও তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ওই দালালের নাম বলেননি। তিনি জানান, নাম প্রকাশ করলে তার ক্ষতি করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে ওই দালাল।
রাজনৈতিক আশ্রয়
ইতালি দূতাবাসের প্রথম সচিব গুইসেপ জিয়োভানি অনুষ্ঠানে জানান, গত তিন বছরে ইটালিতে ৬০ হাজার বাংলাদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ইতালিতে যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন, তাদের মধ্যে দুই শতাংশ সফল হন। বাকিদেরকে ফেরত পাঠানো হয়।’
ইতালিতে দুই লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বৈধভাবে অবস্থান করছেন। তাদেরকে ইটালির প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু অবৈধপথে অভিবাসীদের ইটালি যাওয়া বন্ধ করা দরকার বলে জানান রাষ্ট্রদূত।