মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী নামের একজন বক্তা সম্প্রতি কোনও এক বয়ানে দাবি করেছেন— ‘প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন।’ তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা এই বক্তব্যটি প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। এই ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা মূলত প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যে সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার, তারই অংশ বলে মনে করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
স্বতন্ত্র ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে— প্রফেসর ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ-আমেরিকার ইসরায়েলকে এক কোটি ডলারের সহায়তার বিষয়টি নিয়ে সর্ব প্রথম ২০২৩ সালের অক্টোবর বাংলা ইনসাইডার নামে একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে তা আরও কিছু অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এই দাবিটি ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে অনুসন্ধান করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। তাদের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যখন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামলার ভয়াবহতা শুরু হয়, সে সময়ই বাংলাদেশে প্রচার হতে শুরু করে যে, ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডা সাইট হিসেবে পরিচিত অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ইনসাইডারের সে বছরের ১৩ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন থেকে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।
ওই প্রতিবেদনে দাবিটির পক্ষে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতির বিষয়ে বলা হলেও ওই মন্ত্রণালয় থেকে সে সময়ে প্রকাশিত কোনও বিবৃতিতে এমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
ওই দাবি সংবলিত কোনও বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়। তা ছাড়া ইসরায়েলের সাংবাদিক এবং ফ্যাক্ট চেকারও এমন কোনও সহায়তার বিষয়ে অবগত নন বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানান। একইসঙ্গে ইউনূস সেন্টারও বিষয়টি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে।
এমতাবস্থায় দেশের সব আলেম ওলামা ও দায়িত্বশীল নাগরিকদের বিভ্রান্ত না হয়ে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের চেষ্টায় থাকা ব্যক্তিদের অপপ্রচার রুখে দেওয়ার আহ্বান জানায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।