চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে হজে যাবেন ৮৭ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি ৮১ হাজার ১০০ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। হজযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) গঠন করেছে ‘হজ টাস্কফোর্স-২০২৫’। গত রবিবার অনুষ্ঠিত প্রথম সভায় হজ টাস্কফোর্স একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, শাহজালাল কেন্দ্রিক হজযাত্রীরা যেন কোনও ধরনের বিড়ম্বনার শিকার না হন তার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের বিমানবন্দরেই সৌদি এরাইভাল ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হবে। এতে করে সেখানকার বিড়ম্বনা বা দুর্ভোগ এড়ানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, হজযাত্রীদের যাতে কোনও রকমের সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় সেজন্য আমাদের টিম কাজ করছে।
সভা সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৯ এপ্রিল হজযাত্রীদের প্রথম ফ্লাইট ছেড়ে যাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। এরআগে ২৭ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন ও হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। হজযাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘব এবং উন্নত সেবা দিতে হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার স্থাপন এবং এ সংক্রান্ত একটি অ্যাপ তৈরি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদিয়া এয়ারলাইন্স সমানভাবে ৫০ শতাংশ করে যাত্রী বহন করবে (৪৩ হাজার ৫৫০ জন করে)। এ ছাড়া ফ্লাইন্যাস এয়ারলাইন্স ১৫ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করবে। ফ্লাইট শিডিউল অনুযায়ী মদিনায় যাবে ২০ শতাংশ এবং মক্কায় যাবে ৮০ শতাংশ হজযাত্রী।
সভার সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে— হজ ফ্লাইটগুলো হবে সম্পূর্ণ ডেডিকেটেড এবং ওভারল্যাপিং নিষিদ্ধ; শাহজালাল বিমানবন্দরে সৌদি ইমিগ্রেশনের ‘এরাইভাল’ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে; হজ টিকিট সরবরাহে এয়ারলাইন্সগুলো হাবের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে; শাহজালালে দুটি বোর্ডিং ব্রিজ হজযাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে; হজ অফিস আশকোনা ভবিষ্যতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে; মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে হজ ক্যাম্প ও আশপাশের হোটেল/রেস্তোরাঁগুলোতে।
এছাড়া শাহজালালে নারী-পুরুষের জন্য আলাদা নামাজের জায়গা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, বিশুদ্ধ পানি, মশা নিধন কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। ছুরি, ব্লেড, স্বর্ণালংকার, সিগারেট, মদ, পান, জর্দা ইত্যাদি বহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। হজযাত্রীদের অবশ্যই মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিতে হবে।
ঢাকা থেকে পরিচালিত সব হজ ফ্লাইট এবার ‘রোড টু মক্কা’ কার্যক্রমের আওতায় পরিচালিত হবে। হজ কার্যক্রমের মনিটরিংয়ের জন্য কন্ট্রোল রুম স্থাপন, বিমানে হজ বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শন এবং বাংলা ভাষাভাষী কেবিন ক্রু নিয়োগ করা হবে। হজ শেষে জমজমের পানি সরবরাহ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও মনিটরিং করা হবে। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও রাখা হবে।
উল্লেখ্য, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে ৫ জুন। হজ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে ৯৪১টি হজ এজেন্সি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাধারণ প্যাকেজ ১-এর খরচ ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা এবং প্যাকেজ ২-এর খরচ ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সাধারণ প্যাকেজে সর্বনিম্ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা।