বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাদের নিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত দুদিনব্যাপী ডিজিটাল ভেরিফিকেশন অ্যান্ড ফ্যাক্ট চেকিং প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। বুধবার (১৬ এপ্রিল) আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে প্রশিক্ষণের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব প্রধান অতিথি হিসেবে প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করে বলেন, সামাজিক মাধ্যমে প্রতিনিয়ত প্রচুর অপতথ্য ছড়াচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাইবার যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছে। এখন ভুল তথ্য, মিথ্যা তথ্য এবং সাইবার যুদ্ধ অন্য যেকোনও সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই।
বর্তমানে সাইবার স্পেসে যে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাবে। এ ব্যাপকতা প্রতিরোধে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে মিথ্যা তথ্য দেশের সামাজিক সৌহার্দ্য নষ্ট করে তাই এ বিষয়টিকে ছোট করে দেখা বা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ। ভুল তথ্য এবং মিথ্যা তথ্য চেক করতে আমাদের লাগবে ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগার। এই ফ্যাক্টস অ্যান্ড ফিগার অথেনটিক কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, বর্তমান ডিজিটাল যুগে ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যা সরকারের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। জনসংযোগ কর্মকর্তারা যদি তথ্য যাচাইয়ের দক্ষতা অর্জন করেন তাহলে তারা সরকারের প্রকৃত বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছতে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন।
প্রশিক্ষণ শেষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত উপপ্রধান তথ্য অফিসার এ.কে.এম. কামরুল আহছান বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ ধরনের প্রশিক্ষণ খুবই সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রশিক্ষণের ফলে জনসংযোগ কর্মকর্তারা দক্ষতা আরও শাণিত হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপ্রধান তথ্য অফিসার) মো. ফয়সল হাসান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়াসহ মূল ধারার বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে যেমন তথ্যের অবাধ প্রবাহ ঘটছে, তেমনি বিভিন্নভাবে ভুল তথ্য, অপতথ্য ছড়িয়ে যাচ্ছে তা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত যেভাবেই হোক না কেন। সেজন্য জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে যেকোনও তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতকরণ বা ফ্যাক্ট চেকিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপ্রধান তথ্য অফিসার) দীপংকর বর বলেন, প্রশিক্ষণে ডিজিটাল কনটেন্ট যাচাই, ওপেনসোর্স ইন্টেলিজেন্স টুলস ব্যবহারের পদ্ধতি এবং ডিজইনফরমেশন মোকাবিলার বাস্তব কৌশল শেখানো হয়।
প্রশিক্ষণে সম্পদব্যক্তি (রিসোর্সপারসন) হিসেবে ছিলেন কদরুদ্দিন শিশির, যিনি বাংলাদেশের লিডিং ফ্যাক্টচেকার ও মিডিয়া প্রফেশনাল।
এরআগে তিনি এএফপি ফ্যাক্টচেক বাংলার সাবেক এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও ছিলেন মিনহাজ আমান, যিনি একজন ডিসইনফরমেশন রিসার্চার এবং ট্রেইনার। লিড রিসার্চার হিসাবে কাজ করছেন ডিসমিস ল্যাব নামে একটি মিডিয়া রিসার্চ সংস্থায়৷ প্রশিক্ষণটি ফ্যাসিলেট করেছে মারুফ আহমেদ, যিনি একজন ইনফরমেশন ইন্টেগ্রিটি রিসার্চার।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের নির্দেশনায় প্রথম বারের মতো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাদের নিয়ে এধরনের প্রশিক্ষণ আয়োজন করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।