ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এবং আব্দুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম ও মিসেস ফারহানা মোনেমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রাকিব উদ্দিন মিনহাজ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় পদ্মা ব্যাংকের কর্মকর্তা এসইভিপি সাব্বির মোহাম্মদ সায়েমকেও আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান, আসামিরা পদ্মা ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখা থেকে ৫ কোটি টাকার ৬ মাস মেয়াদি ঋণ গ্রহণ করে পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও শর্ত ভঙ্গ করেন। পরে ঋণের অর্থ ব্যবসার চলতি মূলধনের কাজে না লাগিয়ে অন্য ঋণের দায় পরিশোধ করেছেন। পরবর্তীতে ঋণের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করে তারা দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল, ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, ঋণ জালিয়াতিসহ আর্থিক অনিয়মের অনেক অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাত থেকে আত্মসাৎ করা অর্থপাচার করে কানাডায় বাড়ি করেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটিয়েছেন। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে। ২০১৭ সালে পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর নাফিজ সরাফাত প্রতারণা ও জালিয়াতি করে বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নেন। যদিও ব্যক্তিগত ও স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তিনি ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন।
দুদকের গোয়েন্দা জানিয়েছে, নাফিজ সরাফাত ও তার সহযোগীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শীর্ষ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান গ্রাম-বাংলা ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে ৪০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন। সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে জেসিকা ইন্টারন্যাশনালের অনুকূলে ৬০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করে ওই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ১৫০ কোটি টাকা পদ্মা ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা সিকিউরিটিজের মাধ্যমে নাফিজ সরাফাতের ব্যক্তি নিয়ন্ত্রণাধীন স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরিয়ে নেওয়া হয়।