বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন (টাফ) নেতারা বলেছেন শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বকেয়া রাখার ছলচাতুরি বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে অ্যাপারেলস প্লাস ইকো লিমিটেড এবং টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণের দাবি জানান তারা।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সংগঠনের সভাপতি ফয়জুল হাকিম ও সাধারণ সম্পাদক আমীর আব্বাস এক বিবৃতিতে বলেন, কোভিড-১৯ এর পর থেকে এক শ্রেণির কারখনা মালিক পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের ছত্রছায়ায় এমন এক লুণ্ঠনের সংস্কৃতি চালু রেখেছে যে, এরা যেমন শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া রাখছে, তেমনি ব্যাংক ঋণের টাকা, বিদ্যুৎ গ্যাস বিলের টাকাও বকেয়া রেখে এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ এর সময় প্রণোদনা প্যাকেজ বাবদ সরকার ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা কারখানা মালিকদের প্রদান করেছিল। কিন্তু সেই প্রণোদনার অর্থ শ্রমিকরা পাননি। এই অর্থ কোথায় কীভাবে ব্যয় হলো, সেই হিসাব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিতে হবে।
নেতারা আরও বলেন, উল্লেখিত দুটি কারখনার জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বকেয়া মজুরি, খোরাকি ভাতা, ছুটির টাকা এবং চলতি মাসের মজুরিসহ ঈদ বোনাস দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের শ্রম মন্ত্রণালাকেই দ্রুত পালন করতে হবে।
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতি বছর ঈদ এলেই এসব ন্যায্য দাবিতে শ্রমিকদের রাস্তায় নামতে হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রত্যাশা ছিল এক্ষেত্রে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে। অথচ বকেয়া মজুরি আদায়ে শ্রমিকদের এখনও আন্দোলনে মাঠে নামতে হছে। দিনের পর দিন শ্রম ভবনের বারান্দায়, রাস্তায় দিন রাত কাটাতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে আন্দোলনরত একজন শ্রমিক স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এমন অমানবিক ঘটনার পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনও দায়িত্বশীল আচরণ দেখা যাচ্ছে না।
নেতারা কারখানাগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগপত্র প্রদান, প্রতি সপ্তাহ শেষে শ্রমিকদের পাওনা মজুরি প্রদান, সরকারি ক্ষেত্রের মতো ফ্যাক্টরিতে সপ্তাহে দুই দিন ছুটি কার্যকর, অবাধে ট্রেড ইউনিয়ন করার স্বাধীনতা প্রদান, বেতন ও সন্তান জন্মকালীন ব্যয়সহ মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস কার্যকর করা, বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মজুরি নির্ধারণ, সারা দেশে পূর্ণ রেশনিং চালু, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা্ করা, স্বাস্থ্য সম্মত বাসস্থান- প্রভৃতি দাবিতে শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান।