সারা দেশে কন্যাশিশু ও নারীর ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের মাত্রা বাড়ছে। নির্যাতনকারীদের শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে, যা আমাদের উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ করে তুলছে বলে জানিয়েছে ‘জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম’। রবিবার (৯ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর ২০৬টি সদস্য সংগঠনের পক্ষে বিবৃতিতে সই করেছেন ফোরামের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার এবং সহ-সভাপতি শাহীনা আক্তার ডলি।
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম মনে করে, যেকোনও প্রকারের নারী নির্যাতনের ঘটনায় বিচারহীনতার সংস্কৃতি, মামলা করতে না দেওয়া বা আপসের জন্য অপরাধীদের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগ, সুষ্ঠু ও দ্রুত তদন্ত না হওয়া, সামাজিক লোকলজ্জা ও ভীতি, ইত্যাদি কারণে এ ধরনের অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না। যে কারণে শহর-গ্রামে বয়স্ক নারী, তরুণী হতে কন্যাশিশুরাও নির্যাতন-নিপীড়ন-ধর্ষণ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।
এতে বলা হয়, মাগুরার এক কন্যাশিশু, যার বয়স মাত্র আট বছর, সেও ধর্ষণ থেকে রেহাই পায়নি। ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ফলে শিশুটি এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এ ঘটনায় শুধু ওই কন্যাশিশুই নন, তার দরিদ্র পরিবারও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর পক্ষ থেকে আমরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ধর্ষণের শিকার ওই কন্যাশিশুর সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন চিকিৎসা, তার পরিবারের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। শুধু মাগুরার কন্যাশিশুই নয়, যেকোনও নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি যৌন সহিংসতা, ধর্ষণ বা অন্য যেকোনও ধরনের নিপীড়নকে গুরুত্বসহকারে দেখা এবং এসব ঘটনার সুষ্ঠু ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবিও জানাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, নারী নির্যাতনের ঘটনায় অপরাধীদের কঠিন শাস্তি ও ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা গেলে নির্যাতন-নিপীড়ন ও যৌন হয়রানির ঘটনা কমে আসবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মাগুরার আট বছরের কন্যাশিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যে অপরাধীরা আটক হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। কিন্তু এ ঘটনায় অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। এছাড়া সারা দেশে নারী নির্যাতন ও হয়রানির যেসব ঘটনা ঘটছে সেগুলোর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সর্বক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দ্রুত ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন’ পাশ করার দাবি জানাচ্ছি। সব সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক দলের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও নারীর অধিকার সুরক্ষায় সোচ্চার হওয়ার জন্য।