জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাতের শিকার হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) শিক্ষার্থী মুশতাক তাহমিদ। বুধবার রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরে জরুরি বিভাগের সামনে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
ঘটনা বিষয়ে তিনি বলেন, সারজিস আলমের সঙ্গে সভা শেষে তারা এনএসইউর ৮ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার সময় একদল দুর্বৃত্ত সারজিস আলম বিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করলে আমরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। আমরা তাদের বলি, ওনারা (সারজিস আলম) আমাদের অতিথি, ঠিকঠাক যেন বিদায় দিতে পারি। সেই বিরোধীদের মধ্যে ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছত্রছায়ায় থাকা কর্মীদের নিয়ে ছাত্রদলের দুজন নেতা ছিল যারা বসুন্ধরা এলাকায় আওয়ামী লীগকে জায়গা করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এক পর্যায়ে আমি অনুভব করি আমার দুর্বল লাগছে। তারপরে বুঝতে পারি আমার পিঠে কাটা। সেখানে ১৪টা সেলাই দেওয়া হয়েছে। এই শিক্ষার্থী বলেন, অপরাধী কোনও দলের না। আপনারা কোনও দল তাদের প্রশ্রয় দিয়ে দায় নেবেন না। তিনি অবিলম্বে আহমেদ শাকিলসহ যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের শাস্তির দাবি জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা আবিদ হাসান। দলের নাম ভাঙিয়ে যারা এ ধরনের অপরাধ করবে তাদের জায়গা দেওয়া হবে না উল্লেখ করে দ্রুততম সময়ে বিচারের দাবি জানান তিনি।
এসময় সেখানে উপস্থিত জুলাই আন্দোলনের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সংগঠক বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার বিচার যদি না হয় তবে বাংলাদেশের প্রতিটি রাস্তা আমরা দখলে নেবো।
ঘটনার পরপর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সের ফেসবুক পেজে বলা হয়, বসুন্ধরা আবাসিকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেটে সারজিস আলমের আসা নিয়ে বৈছা (বৈষম্যবিরাধী ছাত্র আন্দোলন) ও ছাত্রদল সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক বসুন্ধরা এলাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করতে আসেন। এদিকে সারজিস আলমের আগমনের খবরে নর্থ সাউথের ৮ নম্বর গেটে জড়ো হয় ছাত্রদল সমর্থকরা। দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঢাবি সিন্ডিকেট ও দল ঘোষণার দিন প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সারজিস আলমকে জেরা করতে থাকেন। এসময় সারজিসের সাথে থাকা একাংশের নেতাকর্মীদের সাথে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের তর্কাতর্কি থেকে হাতাহাতি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে সারজিস আলম দ্রুত এলাকা ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে হাতাহাতির মধ্যেই বৈছা সমর্থক মুশতাক তাহমিদকে ছুরিকাঘাত করা হয় এবং পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মুশতাক বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত আছেন। ওই পোস্টে উল্লেখ করা হয়, কীভাবে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, কারা দিয়েছে এটা বের করা খুবই সহজ, নর্থ সাউথের গেটে ও আইইউবির গেটে খুবই উন্নতমানের সিসি ক্যামেরা আছে, ফুটেজ দেখলে জানা যাবে কীভাবে কে আহত করেছে।
আরও পড়ুন:
এনএসইউয়ের সামনে বাকবিতণ্ডার ভিডিও ভাইরাল, ফেসবুকে সারজিস আলমের ব্যাখ্যা