সাবেক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার শ্যালক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হারিচুর রহমান সোহানকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে রাজধানীর বেইলি রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা তিনটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সোহান। গ্রেফতারের পর তাকে খিলগাঁও থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ ও দুদকের তদন্ত
হারিচুর রহমান সোহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিম গত ১২ সেপ্টেম্বর সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, তার স্ত্রী ও পরিবারের ১০ জনের নামে-বেনামে অর্জিত বিপুল সম্পদের খোঁজে ৩০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠায়।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, আছাদুজ্জামান মিয়া, তার স্ত্রী আফরোজা আমান, ছেলে আসিফ শাহাদাৎ, মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা ও আসিফ মাহদিন এবং শ্যালক হারিচুর রহমান সোহানের নামে বিপুল সম্পদ রয়েছে, যা তারা অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অবৈধ সম্পদ ও ব্যবসা
অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক কমিশনার ও তার শ্যালক হারিচুর রহমান নামে-বেনামে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন। সোহানের নামে পরিবহন ব্যবসা রয়েছে, যেখানে মূল বিনিয়োগকারী হিসেবে আছাদুজ্জামান মিয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রমিক লীগ নেতা সোহান নিজেকে ‘পিওর গোল্ড লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও পরিচয় দিতেন।
রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় তার একাধিক সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। বেইলি রোড ও শাহজাহানপুরে তার ফ্ল্যাট রয়েছে। বনশ্রী ও আফতাবনগরে একাধিক প্লটের মালিক তিনি। এর মধ্যে বনশ্রীর একটি প্লটে বাড়ি নির্মাণকাজও চলছে।
অভিযোগ রয়েছে, আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধ অর্থ ব্যবহার করেই এসব সম্পদ গড়ে তোলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছে বলে জানা গেছে। সোহানের বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে আরও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে এবং তার সম্পদের উৎস যাচাই করা হচ্ছে।