রাজধানীর হাজারীবাগে ট্যানারি কাঁচাবাজার এলাকার একটি গুদামে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এলাকার অবকাঠামোগতভাবে ঘিঞ্জি এলাকার জন্য ফায়ার ফাইটারদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেন, আমাদের টিটিএল (টার্ন টেবল লেডার) পড়ে আছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ভবনটির ভেতর থেকে কাজ করতে হয়েছে। বাইরের দিক থেকে যে কাজ করার কথা, সেটি করা সম্ভব হয়নি। কারণ টিটিএল বসানোর মতো অবস্থা এখানে নেই।’
আগুন নেভাতে পানিরও সঙ্কটে পড়তে হয়েছে ফায়ার ফাইটারদের। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘পানির সঙ্কট ছিল, অবশ্যই। আমাদের বিশেষ পানিবাহী গাড়ি এসেছে। আমরা পুরান ঢাকা, হাজারীবাগের মতো এলাকাগুলোতে পানির সঙ্কটে ভুগি। এজন্য আমরা যখন আসি, তখন বিশেষ পানিবাহী গাড়ি সঙ্গে করেই নিয়ে আসি।’
ভবনটির পেছনের অংশে ফায়ার ফাইটাররা যেতেই পারেননি। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতেও অনেক সময় লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কনজাস্টেড জায়গা, আপনারাও দেখছেন। কাজ যতটুকু করতে পেরেছি ভবনের ভেতরের দিক দিয়ে। বাইরে থেকে খুব বেশি করা যায়নি। এটা এই এলাকার যে সেটাপ (অবকাঠামোগত গঠন), সেটার ব্যর্থতা।’ ফায়ার ফাইটাররা ভেতরে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থও হয়ে পড়ছিলেন বলেও জানান তিনি। তাদের বারবার বাইরে থেকে এসে শ্বাস নিয়ে যেতে হচ্ছিল, উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও ছিল না বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না, যা ছিল যৎসামান্য। দুয়েকটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ছাড়া আমরা তেমন কিছুই দেখি নাই। কিছু এক্সটিংগুইশার আছে, তবে আরও কোনও ব্যবস্থা ছিল কিনা, এখন দেখলে জানা যাবে।’
এর আগে আজ দুপুরের দিকে ভবনটিতে আগুন লাগে, ২টা ১৪ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সংস্থাটির সদর দফতরের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার জানান, ‘সাত তলা ভবনের পাঁচ তলায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পরে আগুন ছয় তলায় ছড়িয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে হাজারীবাগ থানা পুলিশ, র্যাব, স্কাউটসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহায়তায় করছে। তবে উৎসুক জনতার ভিড়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে।’ পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরাও যোগ দেন।
আরও পড়ুন: