লন্ডনে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখনও চলছে; যা আগামী শুক্রবারের মধ্যে শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সেন্ট্রাল লন্ডনের ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’- এর সামনে ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে সাংবাদিকদের ডা. জাহিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া কখনোই নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা মানুষের সামনে আনতে চাননি। ওনার ওপর অনেক অত্যাচার হয়েছে, কিন্তু উনি সবসময় মানুষের কথা বলেছেন, নিজের কথা বলেননি। আজও উনি যখন জানতে পেরেছেন, তীব্র শীতের মধ্যে আপনারা (সাংবাদিক) বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তখন অনিচ্ছাসত্ত্বেও বললেন, যাও।’
খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন ও সাংবাদিকসহ সবার প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে জানান বিএনপির এই নেতা।
চিকিৎসার অগ্রগতি প্রসঙ্গে ডা. জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার ক্রনিক লিভার ডিজিস, ক্রনিক কিডনি ডিজিস ও হার্টের অ্যাসেসমেন্টগুলো এখনও সম্পন্ন হয়নি। এগুলো সম্পন্ন হতে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত লাগতে পারে। এরপর এখানকার ডাক্তাররা ওনার পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে পরিকল্পনা করবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে দুর্নীতির এক মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে পাঠানো হয় তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। কারাগারে যাওয়ার পর তার অসুস্থতা বাড়ে। এর মধ্যে সরকারের কাছে কয়েকবার দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। করোনার সময় নির্বাহী আদেশে কারাগার থেকে মুক্তি মিললেও বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি তৎকালীন সরকার।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর তার যে মামলায় সাজা হয়েছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। পরে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গত ৮ জানুয়ারি লন্ডনে আসেন সাব্কে এই প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘লন্ডন ক্লিনিকে’। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার।