সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষার্থী ও তরুণদের আঁকা অনুপ্রেরণামূলক দেয়াল চিত্র সংগ্রহ করে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বিশ্বব্যাংক। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে ‘পেইন্ট ইওর স্কাই, মেক ইট ইওর: ফিউচার বাংলাদেশ ইন দ্য আইজ দ্য ইয়ুথ’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রদর্শনীতে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, রংপুর, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ ১২টি জেলার শিক্ষার্থী ও তরুণদের আঁকা প্রাণবন্ত দেয়ালচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। এসব শিল্পকর্ম ভবিষ্যতের জন্য তাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরে।
অনুষ্ঠানে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এই আয়োজনকে শিল্পের শক্তির এক অনন্য উদযাপন হিসেবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, শিল্প মত প্রকাশের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের রচনা, বিশেষত বাংলার দুর্ভিক্ষের চিত্রায়নের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, শিল্প আবেগ এবং গল্পগুলোকে ধারণ করে, যা মানুষকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। এই শিল্পকর্মগুলো একইভাবে অভিব্যক্তিপূর্ণ।
অর্থ উপদেষ্টা এই আয়োজনের জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণরা এসব শিল্পকর্মের মাধ্যমে তাদের চিন্তাভাবনা যথাযথভাবে প্রকাশ করেছে, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছে। নির্বাচিত চিত্রকর্মগুলো সম্বলিত একটি বই প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপনের জন্য উৎসাহিত করছি।
তিনি তরুণ শিল্পীদের প্রশংসা করে বলেন, তাদের পরিবার নিশ্চয়ই অত্যন্ত গর্বিত।
বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বিশ্বব্যাংক সবসময়ই স্বীকার করে আসছে। আমরা বিশ্বব্যাপী তরুণদের ক্ষমতায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি প্রতিকূল সময়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে শিল্পকলায় কাজে লাগানোর প্রশংসা করে বলেন, এই প্রদর্শনীতে ভবিষ্যতের জন্য তাদের উদ্বেগ ও অগ্রাধিকার তুলে ধরা হয়েছে এবং তাদের কথা শোনা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ‘পেইন্ট ইয়োর স্কাই, মেক ইট ইওরস’ শিরোনামে তরুণদের চেঞ্জ-মেকার হওয়ার সীমাহীন সম্ভাবনা প্রতিফলিত হয়েছে।
সিক আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে সামাজিক আন্দোলনের সময় দেয়াল শিল্পের উদ্ভব ঘটে। জুলাই এবং আগস্টের অশান্ত মাসগুলোতে, রাস্তাগুলো ন্যায়বিচার এবং পরিবর্তনের আহ্বানে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। এই অসাধারণ আন্দোলন থেকে তরুণ ও শিক্ষার্থীরা তাদের শক্তিকে প্রাণবন্ত শৈল্পিক প্রকাশে রূপান্তরিত করেছে।
পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে আয়োজিত এই প্রদর্শনী ২৩ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইভেন্ট সম্পর্কিত একটি প্রকাশনা এবং একটি ভিডিও চালু করা হয়।