X
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

৫ বছর পর পর জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০:২৫আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২০:৫৬

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সংস্কারের মাধ্যমে সংবিধানে একটি জায়গা নিশ্চিত করেন— ৫ বছর পর পর জনগণ তার স্বাধীন সার্বভৌম ক্ষমতা যাতে প্রয়োগ করতে পারে। সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য যা যা করা দরকার, তা করলেই আমার মনে হয় এই সংবিধান সার্বভৌম হবে। সেই সংবিধানে বাংলাদেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) ‘খসড়া সংবিধানের প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খসড়া সংবিধানের প্রস্তাব তুলে ধরেন ফোরামের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সালেহ উদ্দিন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হলে সংবিধানে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, মৌলিক মানবাধিকার, মৌলিক অধিকারসহ আরও যা যা প্রত্যাশার জায়গা আছে সব নিশ্চিত হবে। সেখানে যদি গরমিল থাকে তাহলে যতভাবেই প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজান না কেন, কোনও প্রতিষ্ঠানই কাজ করবে না। যেমন- কাজ করেনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হয়েছে আমরা দেখেছি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য একমাত্র পথ দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা। ভোটার মাধ্যমে জনগণের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা সংবিধান সংশোধনের কথা ভাবছি— সেটা তাদের (শহীদদের) প্রতি এক ধরনের শ্রদ্ধা জানানো। আমাদের সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার কথা চিন্তা করতে হবে। সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদের যদি তাকাই তাহলে এই প্রস্তাবনাগুলো এই সরকারের জায়গা থেকে সংবিধান সংশোধনের কোনও সুযোগ আছে কিনা, সেটা ভেবে দেখা দরকার। কেননা, এই অনুচ্ছেদে আপনি সবকিছু করতে পারবেন শুধু সংবিধান সংশোধন ছাড়া। এখন সংসদ নেই, গণভোট নেই— এসব প্রশ্ন এখানে যৌক্তিক ও আইনগতভাবে আসবে।

আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম. এ মতিন বলেন, যে সংবিধান ফ্যাসিস্টদের জন্ম দিয়েছে, বিপ্লবের পর সেই সংবিধান গুরুত্ব হারিয়েছে। কারণ বিপ্লব তো সংবিধানের আওতায় হয়নি। এই বিপ্লব ব্যর্থ হলে বিপ্লবীদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হতো। যারা জীবন দিলো, তাদের যে চিন্তা ভাবনা, তাদের যে চাওয়া-পাওয়া এগুলোকে ধারণ করে সংলাপের ভিত্তিতে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা করা এবং একটি নির্বাচন করাই হোক লক্ষ্য।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ও নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংবিধান শুধু আইজ্ঞদের বিষয় নয়, এটি জনগণের বিষয়। এখানে নাগরিকদের মতামতও থাকতে হবে। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানকে কলুষিত করা হয়। তিনি শাসন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দেন দেন।

ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, এখন সংবিধানের কিছু জায়গায় নতুন চিন্তা ভাবনা হতেই পারে। তাই মৌলিক মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে কী কী ধরনের প্রতিকার আমরা পেতে পারি, ভবিষ্যতে কী করতে পারি, সেটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।  

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ৫৩ বছরে আমরা একটা ভালো নির্বাচনি ব্যবস্থা তৈরি করতে পারিনি। গত ১৫ বছরে আইন করে লুটপাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মৌলিক অধিকার চর্চার মতো পরিস্থিতি তৈরি না করলে কোনও চেষ্টাই ফলপ্রসূ হবে না।

অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, রাজনীতিবিদেরা নাগরিকদের প্রজা মনে করেন। আমরা আসলেই প্রজা হয়ে গেছি। সংবিধান বার বার ব্যর্থ হয়েছে। নাগরিকের ক্ষমতা নেই। সংসদ সদস্যরা যতক্ষণ পর্যন্ত জবাবদিহির আওতায় না আসবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদেরকে প্রজা হয়েই থাকতে হবে।

এর আগে খসড়া উপস্থাপনে দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট আইন সভা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী কেউ দু’বারের বেশি নির্বাচিত হতে পারবেন না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং বিচারক নিয়োগে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কমিশন গঠনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

 

/ইউআই/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের সভায় মহিলা লীগ নেত্রী, বললেন ‘কখনোই আ.লীগের কর্মসূচিতে যাইনি’
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন উৎসর্গ করা ৭ নারী কারা
সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আবারও ফ্যাসিবাদের জন্ম হ‌বে: গোলাম পরওয়ার
সর্বশেষ খবর
ছয় দফা দাবিতে আগারগাঁওয়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ
ছয় দফা দাবিতে আগারগাঁওয়ে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ
আপিল বিভাগের নতুন দুই বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
আপিল বিভাগের নতুন দুই বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত
ফয়জুল করিমকে মেয়র ঘোষণার দাবিতে আদালতের সামনে অবস্থান
ফয়জুল করিমকে মেয়র ঘোষণার দাবিতে আদালতের সামনে অবস্থান
‘নারী বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি ন্যায়বিচারের অভিগম্যতা নিশ্চিতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’
‘নারী বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি ন্যায়বিচারের অভিগম্যতা নিশ্চিতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’
সর্বাধিক পঠিত
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ৩ ভুল
রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ৩ ভুল
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ে ডিএমপির বার্তা
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ে ডিএমপির বার্তা