আপন পিতা-মাতার স্থানে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ফুফা-ফুফুর নাম ব্যবহার করে গত ২৮ বছর ধরে পুলিশে চাকরি করছেন মো. সাইফুল ইসলাম হাওলাদার (বাদল) ওরফে মো. সাইফুল ইসলাম। এ বিষয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এমনই অভিযোগে মামলা করেছেন ঢাকার রূপনগরের বাসিন্দা ফুফাতো ভাই মো. সালাহ উদ্দিন। সোমবার (২৮ অক্টোবর) তিনি আদালতে এই মামলার আবেদন করেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিলরুবা আফরোজ দিথি বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) আদালত সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি নেওয়া সাইফুল ইসলাম বর্তমানে রাজধানীর মিরপুর পুলিশ লাইনে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পদে কর্মরত আছেন।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়, আসামি সাইফুল ইসলাম বাদীর মামাতো ভাই। বাদীর বাবা মো. শাহজাহান পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। গত ২৩ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে গত ১৪ অক্টোবর পিরোজপুর জেলার কাউখালী থানার রঘুনাথপুর গ্রামে মামা বাড়িতে ওয়ারিশ সনদপত্র সংগ্রহ করতে যান। সেখানে অবস্থানকালে বাদী তার নিকট আত্মীয়-স্বজনদের কাছে জানতে পারেন যে, তার মামাতো ভাই সাইফুল ইসলাম হাওলাদার (বাদল) জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বাদীর পিতা-মাতার নাম নিজ পিতা-মাতা ও ঠিকানা ব্যবহার করে ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করে আসছেন।
তিনি জন্ম সনদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদেও বাদীর পিতা-মাতার নাম নিজ পিতা-মাতা হিসেবে ব্যবহার করেছেন। পরবর্তীকালে এই মামলার বাদী ঢাকায় এসে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে আসামিকে জিজ্ঞেস করলে আসামি বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বাদীকে বাড়াবাড়ি না করার জন্য বলে এবং বাড়াবাড়ি করলে বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলা ও অন্যান্য মামলায় ফাঁসানোর হুমকি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাদীপক্ষের আইনজীবী মীর আলমগীর হোসেন জানান, আসামি হচ্ছেন এ মামলার বাদীর আপন মামাতো ভাই। ১৯৯৬ সালে বাদীর পিতা-মাতা ও ঠিকানা ব্যবহার করে পুলিশের চাকরি করছেন। সে এর মাধ্যমে রাষ্ট্রর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমরা তাকে আইনের আওতায় আনার জন্য মামলাটি করেছি।
মামলার বাদী সালাহ উদ্দিন জানান, আমার মামাতো ভাই আমার পিতা-মাতার পরিচয়ে চাকরি নিয়েছে, এখন বিষয়টি জানতে পারায় তিনি হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। সব জায়গায় আমার বাবা-মায়ের পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছেন।
এ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চেয়ে আসামির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।