রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার কোম্পানি ডোম-ইনোর সঙ্গে জমি উন্নয়নের চুক্তি ও ফ্ল্যাট কিনে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েক শ ফ্ল্যাট ও জমির মালিক। এসব ফ্ল্যাট বুঝে পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীতে ডোম-ইনোর কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এই দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এ সময় তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তিন থেকে চার বছরের মধ্যে প্রকল্প সমাপ্ত করার চুক্তিতে ৩০ জন জমির মালিকের ভূমিতে উন্নয়নকাজ শুরু করে ডোম-ইনো ডেভেলপার কোম্পানি। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী জমির মালিকদের সম্পূর্ণ অগ্ৰিম টাকাও দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া গত ১৭ বছরে এমন ৫২টি প্রকল্পে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ করে গ্রাহকদের বিপদে ফেলেছে কোম্পানটি। ওই সব প্রকল্পে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নেওয়া পাঁচ শতাধিক গ্রাহক ৭০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করেও ফ্ল্যাট বুঝে পাচ্ছেন না।
কোম্পানির কর্তাব্যক্তিরা গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা এক মহাসংকটে পতিত হয়ে প্রায় পথে বসেছি। বছরের পর বছর, দশকের পর দশক পার হতে চললো। তবু তাদের কাজ শেষ করার কোনও লক্ষণ নেই। তারা আমাদের কষ্টার্জিত অর্থ লুটে নিয়ে নিয়ে কোন খাতে ব্যয় করছে, তা আমাদের অজানা। কবে কোন প্রকল্পের কাজ শেষ করবে বা আদৌ করবে কি না, সে সম্পর্কে তাদের কোনোই পরিকল্পনা নেই।
এ সময় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে ভুক্তভোগীরা বলেন, আইনি পথে রয়েছে দীর্ঘসূত্রতা এবং এর ব্যয়ভার আমাদের অনেকেরই অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে বহন করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে রিয়েল এস্টেট আইনটি একতরফাভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীবান্ধব আইনে পরিণত করা হয়েছে। এর সুষ্ঠু সংস্কার ছাড়া আমাদের পক্ষে যথাযথ প্রতিকার পাওয়া অসম্ভব। পরিস্থিতি আমাদের একতাবদ্ধ হয়ে পথে নামতে বাধ্য করেছে। এই প্রবঞ্চক কোম্পানির বিরুদ্ধে জমি ও ফ্ল্যাট মালিকদের প্রাপ্য অধিকার আদায়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ সময় পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ গ্রহীতাদের জন্য ডোম-ইনোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণসহ ন্যায্য সমাধান দিতে হবে; ডোম-ইনো এবং তার পরিচালনা পর্ষদ নামে-বেনামে যে স্থাবর সম্পত্তি কিনেছে, তা বাজেয়াপ্ত করতে হবে; ডোম-ইনো ও তার পরিচালকদের সবার ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে হবে; রিয়েল এস্টেট কোম্পানিদের প্রতিষ্ঠান রিহ্যাব থেকে ডোম-ইনোকে বহিষ্কার এবং রিহ্যাবের সদস্যপদ স্থায়ীভাবে বাতিল করতে হবে; ডোম-ইনোর ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
ভুক্তভোগী জমি ও ফ্ল্যাট মালিকদের পক্ষে বক্তব্য দেন হুমায়ুন হাসান, আদনান সোবহান, সিহাব উদ্দিন আহমেদ, তোবারক হোসেন খান রিয়াদ, ফজলুর রহমান খান, মাইনুল আলম, তন্ময় মঞ্জুর এ মোরশেদ প্রমুখ।