সালমান এফ. রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সাইনোভিয়া ফার্মার ৩৮০ জন শ্রমিক-কর্মচারী দীর্ঘ ৩২ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বঞ্চিতরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে 'সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি-এর সাধারণ কর্মচারী' ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। এসময় তারা সাইনোভিয়া ফার্মার ম্যানেজমেন্টের শ্রমিক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদও জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সাইনোভিয়া ফার্মার সিনিয়র টেরিটোরি ম্যানেজার মো. মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা ৩৮০ জন শ্রমিক-কর্মচারী, সাইনোভিয়া ফার্মার (সাবেক সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড) স্থায়ী এমপ্লোয়ি। আমরা বিগত ১২ আগস্ট থেকে হেড অফিসে আমাদের দীর্ঘ ৩২ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছি। এ ব্যাপারে আমরা শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ, সেগুনবাগিচার সেনাবাহিনী ক্যাম্প, শ্রম অধিদফর ও কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে অবগত করেছি।
কিন্তু দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সাইনোভিয়া ফার্মার ম্যানেজমেন্ট গত ২১ অক্টোবর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রাত ৯টায় আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে একটি সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন যে আমরা ৩৮০ জন শ্রমিক-কর্মচারী বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে যে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও বেআইনি। কিন্তু আমরা শ্রমিক-কর্মচারীরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কারণ বিষয়গুলো বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা।
তারা আরও অভিযোগ করেন, আমরা গত ১২ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত সেগুনবাগিচার হেড অফিস দখল করে রেখেছি যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ। গত ১২ আগস্ট আমরা হেড অফিসে আমাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসলে সাইনোভিয়া ফার্মার ম্যানেজমেন্ট সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। এমনকি তারা নিজেরাই শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার ভয়ে হেড অফিসে আসেন না। আমরা কখনোই কোম্পানির স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করি নাই।
তিনি বলেন, সাইনোভিয়া ফার্মার ম্যানেজমেন্টের দুরভিসন্ধিমূলক কাজের অংশ হিসেবে গত ২১ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্যসহ কিছু বহিরাগত লোক নিয়ে এসে অবস্থান কর্মসূচি পালনরত শ্রমিক-কর্মচারীদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালায় এবং অবস্থান কর্মসূচি ভণ্ডুল করে দিয়ে অফিসের মূল ফটকে তালা মেরে দেয়। আপনাদের মাধ্যমে এ বর্বর হামলার তীব্র নিন্দাও প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তারা আরও অভিযোগ করেন যে শ্রমিক-কর্মচারীরা অফিসের ভেতরে কর্মরত-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ। কারণ কোম্পানিতে বিদ্যমান সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আগামীকাল ২৪ অক্টোবর ঢাকায় পুনরায় আপস মীমাংসার সভা অনুষ্ঠিত হবে এবং সভায় সাইনোভিয়া ফার্মার মালিকপক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদানে সক্ষম এমন প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে অভিযোগকারী শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের গত ৯ অক্টোবরের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩৮০ জন শ্রমিক-কর্মচারীর বকেয়া-বেতন পরিশোধের দাবিটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক ও আইনগতভাবে বৈধ।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাইনোভিয়া ফার্মার সিনিয়র টেরিটরি ম্যানেজার সঞ্জীব চক্রবর্তীসহ অনেকে।