সম্প্রতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগকে কেন্দ্র করে সচিবালয়ে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের বিশৃঙ্খলা তদন্তে গঠিত এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটির একমাত্র সদস্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ।
তিনি বলেছেন, সচিবালয়ে ডিসি হতে ইচ্ছুকদের বিশৃঙ্খলা শোভন হয়নি। ডিসি ফিটলিস্টে নাম থাকলেই যদি তারা মনে করেন ডিসি হয়ে গেছেন, এটা ঠিক নয়। আমাদের বাছাই করে ৬০ জনের তালিকা দিতে বলেছে। যারা ডিসি হননি, তারা-তো পদাবনত হননি, ইজ্জতহানি হয়নি। তারা কেন হননি, আমরা কিন্তু সেটা প্রকাশ করিনি। যদি প্রকাশ করার কোনও আইনগত সুযোগ থাকে (যদিও সেই সুযোগ নাই) তাহলে তারা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হবেন। অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট অনুযায়ী আমরা এটা প্রকাশ করতে পারি না। তিনি সেই পদের জন্য যোগ্য হতে পারেননি, অযোগ্য শব্দটা আমরা ব্যবহার করি না।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, একটা জেলার ডিসি মানে একটি মিনি বাংলাদেশের নেতা। বর্তমান সময়ে ১২০টি কমিটির সভাপতি তিনি। ডিসির মাধ্যমেই সব কিছু চ্যানেলাইজ হয়ে যায়। সুতরাং ডিসির অভিজ্ঞতা, বয়স, স্বাস্থ্য অনেক কিছু বিবেচনা করতে হয়। আমি কিন্তু তাদের বিভাগীয় মামলা করার অথরিটি না। সাক্ষ্য-প্রমাণে আমি কী পেলাম সেটা বলতে পারি, কারা দোষ করেছে কারা করেনি।
এম এ আকমল হোসেন আজাদ বলেন, ১ হাজার ডেপুটি সেক্রেটারি থেকে মাত্র ৬৪ জন ডিসি হন। বর্তমান সরকার পাঁচ জন বাদে ৫৯ জনকে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রেকর্ড আছে একজন ডিসিকে দ্বিতীয় দিনেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। যাওয়ার আগে যদি প্রি কন্সেন্ট বলেন, এদের সবাই স্বৈরাচার সরকারের উপকারভোগী ছিল। কয়েকজন সচিবের নেতৃত্বে হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা যাচাই বাছাই করে দেখেছেন, টপ স্কোরার, বেস্টদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে জনপ্রশাসন সচিব কয়েকজনকে বাতিল করেছেন।
উল্লেখ্য, ডিসি নিয়োগ নিয়ে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হট্টগোল করার বিষয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদের নেতৃত্বে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে, আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ৮ জন জেলা প্রশাসকর নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪ জন জেলা প্রশাসকের জেলা রদবদল করা হয়েছে। নিয়োগ ও বদলি চলমান প্রক্রিয়া; বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পদায়ন ও বদলি চলমান থাকবে।