পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ড. মো. শামসুদ্দোহা খন্দকার ও তার স্ত্রীর ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলী এই অভিযোগপত্র জমা দেন। বুধবার (৩ জুলাই) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে।
আদালতে সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা আক্কাস আলী এসব তথ্য জানান।
২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি শামসুদ্দোহা খন্দকার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মঙ্গলবার বিকালে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন।
দুদক সচিব জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সাবেক চেয়ারম্যান এবং পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ড. মো. শামছুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনসহ বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। মামলার তদন্ত শেষে শামছুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ গোপনসহ ২ কোটি ৮৭ লাখ তিন হাজার ৩৭৮ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন এবং বিভিন্ন ব্যাংকে সন্দেহজনক তথা অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এতে দুদক তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেয়। অনুমোদন পেয়ে মঙ্গলবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
তিনি আরও জানান, একইসঙ্গে শামছুদ্দোহা ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ তিন হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদ গোপনসহ ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকার পেশায় একজন গৃহিণী হয়েও বিভিন্ন ব্যাংকে সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ায় দুদক চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেন। অনুমোদন পেয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম পৃথক আরেকটি চার্জশিট দাখিল করেন।
দুদক সূত্রে আরও জানা গেছে, এই দম্পতির নামে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১ হাজার ২৭ শতক জমি আছে। দলিলে এসব জমির দাম ৭০ কোটি টাকা দেখানো হলেও আদতে বাজারদর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি। এছাড়া রাজধানীর গুলশানের ১৩৫ নম্বর রোডের এসইএস (এ) ৬ নম্বর প্লটে ১ বিঘা জমির ওপর নির্মিত একটি সরকারি ডুপ্লেক্স বাড়ি আট বছর ধরে দখলে রেখেছেন শামসুদ্দোহা, যার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা। এই আট বছরে সরকারকে কোনও ভাড়া দেননি, উল্টো বাড়িটি বরাদ্দ চেয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন পুলিশের এই সাবেক কর্মকর্তা।