X
শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
১৫ আষাঢ় ১৪৩১

চাকরির বিজ্ঞাপনের আড়ালে শত কোটি টাকার যৌন ব্যবসা, মূলহোতা মেডিক্যাল শিক্ষার্থী!

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৬ জুন ২০২৪, ১৬:১৯আপডেট : ২৬ জুন ২০২৪, ১৭:১৮

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দিয়ে তরুণীদের ফাঁদে ফেলতো একটি চক্র, যেটা গড়ে তুলেছিল মেডিক্যালের দুই শিক্ষার্থী। ফাঁদে পা দেওয়া তরুণীদের ব্যক্তিগত ছবি হাতিয়ে নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে পরে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করতো। দীর্ঘদিন ধরে শত শত তরুণীকে ফাঁদে ফেলে চক্রটি। এভাবে তারা কয়েক বছরে শত কোটি টাকার ব্যবসা গড়ে তোলে।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এসব কথা জানান।

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জুন) ঢাকা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করার তথ্য জানায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলো– মো. মেহেদী হাসান (২৫) ও শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)। তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, একটি ল্যাপটপ এবং বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয় বলেও জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান মোহম্মদ আলী মিয়া

সিআইডি প্রধান বলেন, ওই চক্র ফেসবুকে ভুয়া আইডি ও পেজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, প্রতিভা অন্বেষণের বিজ্ঞাপন দিয়ে তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নিতো। পরে সেই ছবি ও ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের যৌন ব্যবসায় বাধ্য করতো।

তিনি জানান, চক্রের মূলহোতা মেহেদী হাসান ও তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন চক্রটি গড়ে তোলে। তারা দুই জনই মেডিক্যাল শিক্ষার্থী। গত ৭ বছরে তারা প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করে। এই টাকা দিয়ে তারা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা ও ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জমি কিনেছে। নির্মাণ করেছে আলিশান বাড়ি। তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও বিপুল অর্থ রাখার তথ্য মিলেছে।

সিআইডি তাদের অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, চক্রটি মূলত উঠতি বয়সী তরুণীসহ যেসব তরুণী পারিবারিক ভাঙনের শিকার বা আর্থিক সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করতো। শুরুতে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন, কখনও মডেল তৈরি, কখনও প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার বিজ্ঞাপন দিতো। যারা সাড়া দিতো তাদের নিয়ে টেলিগ্রামে গ্রুপ খুলতো। তারপর তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিদেশি বায়ারদের কাছে পাঠানোর কথা বলে আপত্তিকর ছবি হাতিয়ে নিতো। সেসব ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অসামাজিক কাজে বাধ্য করতো। চক্রটির টেলিগ্রাম গ্রুপে হাজার হাজার সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। যারা একটি নির্দিষ্ট অর্থ দিয়ে ওই গ্রুপগুলোতে যুক্ত থাকতো।

এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান মোহম্মদ আলী মিয়া বলেন, ২০১৭-১৮ সাল থেকে চক্রটি কাজ করে যাচ্ছে। তাদের একজন গাজীপুরের ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পড়ে, আরেকজন পরে ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজে।

তিনি বলেন, এখানে যারা সার্ভিস নিচ্ছে তাদেরও আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। এখানে তিন ধরনের অপরাধ হচ্ছে। একটি সাইবার ক্রাইম অপরাধ, একটি নকল আইডি খুলে নকল বিজ্ঞাপন দেওয়ার অপরাধ। পর্নোগ্রাফি করছে, সেটি আরেকটি অপরাধ।

/কেএইচ/আরকে/এফএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
আনসার আল ইসলামের তিন সদস্য গ্রেফতার
প্রথমে ভিজিট ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে জিম্মি, তারপর চলে নির্যাতন
গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: নাশকতার মামলায় গ্রেফতার কাউন্সিলর কারাগারে
সর্বশেষ খবর
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে কাল
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে কাল
নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড়ধসে কৃষকের মৃত্যু
নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড়ধসে কৃষকের মৃত্যু
বাতিল হওয়া গানটি মুক্তির আলো পেল যেভাবে...
বাতিল হওয়া গানটি মুক্তির আলো পেল যেভাবে...
বিএনএম’র নতুন মহাসচিব আবদুর
বিএনএম’র নতুন মহাসচিব আবদুর
সর্বাধিক পঠিত
ফের প্রেক্ষাগৃহে ছুটলেন শাকিব খান
ফের প্রেক্ষাগৃহে ছুটলেন শাকিব খান
গ্যাস্ট্রিকের সহজ ঘরোয়া চিকিৎসা জেনে নিন
গ্যাস্ট্রিকের সহজ ঘরোয়া চিকিৎসা জেনে নিন
তীব্র হচ্ছে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের আশঙ্কা
তীব্র হচ্ছে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের আশঙ্কা
‘আমার স্বামীর যৌন চাহিদা অনেক বেশি’
‘আমার স্বামীর যৌন চাহিদা অনেক বেশি’
জামালকে টাকা না দেওয়ায় আর্জেন্টাইন ক্লাবকে ফিফার শাস্তি
জামালকে টাকা না দেওয়ায় আর্জেন্টাইন ক্লাবকে ফিফার শাস্তি